জাতীয় পরিচয়পত্রে পরিচয় আর নামের রকমফের

ঢাকা সিটি করপোরেশনের একটি ওয়ার্ডের ভোটার মো. আমীর হোসেন সম্প্রতি তার জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। ২৬৯০২৪৩৮৫৫১৭৯ পিন নম্বরের এই ভোটারের 'স্বামী' হিসেবে লেখা আছে স্ত্রী রোজী হোসেনের নাম। আরেক ভোটার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পেয়েছেন ২৬৯১৬৫১২০২০৫৬ পিন নম্বরের পরিচয়পত্র। এই ভোটারের বাংলায় নাম এসেছে মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান। পরিচয়পত্রে ভোটারের পরিচয় আর নামের রকমফের জানাচ্ছেন মঈনুল হক চৌধুরী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2008, 08:41 AM
Updated : 8 April 2008, 08:41 AM
ঢাকা, এপ্রিল ৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ঢাকা সিটি করপোরেশনের একটি ওয়ার্ডের ভোটার মো. আমীর হোসেন সম্প্রতি তার জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। ২৬৯০২৪৩৮৫৫১৭৯ পিন নম্বরের এই ভোটারের 'স্বামী' হিসেবে লেখা আছে স্ত্রী রোজী হোসেনের নাম।
আরেক ভোটার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পেয়েছেন ২৬৯১৬৫১২০২০৫৬ পিন নম্বরের পরিচয়পত্র। এই ভোটারের ইংরেজিতে নাম সার্টিফিকেট অনুযায়ীই রয়েছে। তবে বাংলায় নাম এসেছে মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান।
এমনিভাবে ঢাকার শফিক আহমেদের নাম এসেছে শফ্ফিক আহমেদ, নাজিয়া রউফ হয়েছে নাজিয়া বউফ। নামের বানানসহ নানান ভুল রয়েছে অজস্র পরিচয়পত্রে। ভোটারদের অভিযোগ, জাতীয় পরিচয়পত্রে এসব ভুলের জন্য সামনে গুরুত্বপূর্ণ কাজে সেগুলো হয়ত ব্যবহার করা যাবে না।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) অবশ্য বলেছে, শিগগিরই পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে ভোটাররা পরিচয়পত্র গ্রহণের সময়ই ভুল চোখে পড়লে তা সংশোধন চলছে। ঢাকা মহানগরীর ভোটারদের জন্য িি.িাড়ঃবৎষরংঃ.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে তথ্য সংশোধনের সুযোগও রাখা হয়েছে। পরে সারাদেশের ভোটাররাও ওয়েবসাইটে তাদের তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।
কমিশন সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৩১ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ভোটার (মোট ভোটারের ৬৬ শতাংশ) নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে এক কোটিরও বেশি ভোটারের পরিচয়পত্র তৈরি হয়েছে। বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ৬৩ লাখ পরিচয়পত্র।
জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকার কথা স্বীকার করে কমিশন সচিব মুহম্মদ হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মঙ্গলবার বলেন, "ঢাকার বাইরে ভুলের সংখ্যা কম। বিতরণ করা পরিচয়পত্রে ভুল থাকলেও ভোটদানে সমস্যা হবে না। কারণ ভোটার তালিকার নাম ও ছবি দেখে ভোট নেওয়া হবে।"
কিছুদিন পরে পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, "এ মুহূর্তে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের উদ্যোগ নিলে চলমান ভোটার তালিকা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।"
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে 'জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (নিরা)' অধ্যাদেশ জারি হবে- আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, "নিরা গঠিত হলে এরপর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার কাজ চলবে।"
গত ১৩ মার্চ নির্বাচন কমিশনের সভায় সিইসি ড. এ টি এম শামসুল হুদা জানান, যেসব স্থানে ছবিসহ ভোটার তালিকার কাজ শেষ তার কয়েকটিতে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, ভুলের পরিমাণ নগণ্য। যেসব জায়গায় ছোটখাট সমস্য রয়েছে সেগুলো খসড়া চূড়ান্ত করার সময় সংশোধনের সুযোগ থাকবে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের বানানে ভুল থাকার কথা স্বীকার করে ইসি সচিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বিতরণ হওয়া পরিচয়পত্র আপাতত ব্যবহার করতে হবে। পরে 'টোকেন মানি' দিয়ে পছন্দ অনুযায়ী (সাধারণ বা স্মার্ট কার্ড) পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা যাবে। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমেই তা বিতরণ করা হতে পারে।"
নিরা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ছবিসহ ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়নের কাজ ইসির হাতেই থাকবে। নিরা গঠিত হলে কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়নের ভার তাদের হাতে ছেড়ে দেবে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/এসএনডি/এমএইচবি/২০৩৫ ঘ.