বিচারপতি আজিজের সিইসি নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা

বিতর্কিত বিচারপতি এম এ আজিজের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পদে নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস বাবুসহ সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবীর দায়ের করা রিট আবেদনের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি গ্রহণ করে এই রায় দেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2007, 09:09 AM
Updated : 12 Dec 2007, 09:09 AM
ঢাকা, ডিসেম্বর ১২ (বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম)--বিতর্কিত বিচারপতি এম এ আজিজের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পদে নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস বাবুসহ সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবীর দায়ের করা রিট আবেদনের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি গ্রহণ করে এই রায় দেন।
রায়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা অবসরের তিন বছরের মধ্যে যেন অন্য কোন পদে নিয়োগ না পেতে পারেন তার জন্য আইন ও সংবিধান সংশোধন করারও সুপারিশ করা হয়েছে।
বিরোধীদল এবং বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের ব্যাপক প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মুখে বিতর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এ আজিজ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
এছাড়া রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধানের বিধান অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কোন বিচারপতি পদে থাকাকালীন অন্য কোন পদে যোগদান নিষিদ্ধ ও অবৈধ।
আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বিচারপতি এম এ আজিজকে ২০০৫ সালের ২৩ মে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ দেয়।
এর বৈধতা নিয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৫ সালের ১৮ জুন আপিল বিভাগের বিচারপতি থাকা অবস্থায় বিচারপতি আজিজের সিইসির হওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা এম এ আজিজ ও সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করে এ প্রশ্ন তোলেন।
গত মে মাসে এ রিটটির ওপর ১০ দিন পূর্নাঙ্গ শুনানি গ্রহণ করে হাইকোর্ট। এতে আদালতের সহায়তাকারী হিসাবে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, সাবেক বিচারপতি টিএইচ খান ও ড. শাহদীন মালিক সাংবিধানিক ব্যাখ্যা দেন।
রিটকারীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এম আই ফারুকী। বিচারপতি এম এ আজিজের পক্ষে ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল ওয়াদুদ ভুইয়া। সরকার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাফর ইমাম।
আদালত বিস্তারিত শুনানি গ্রহণ করে দেওয়া রায়ে যে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিচারপতি আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল তাকে অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করেছে।
রায়ের অভিমতে আদালত বলেছে, বিচার বিভাগ, নির্বাচন্ কমিশনসহ রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ সরকারের অন্তর্ভূক্ত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে থাকাকালীন সরকারের অন্য কোন বিভাগের কোন পদে নিয়োগ বা যোগদান সংবিধান অনুযায়ী নিষিদ্ধ ও অবৈধ। বিচার বিভাগের মর্যাদা ও স্বাধীনতা এবং বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা ও স্বাতন্ত্রর জন্য এটা প্রয়োজন।
রায়ে আরও অভিমত দেওয়া হয়েছে যে, আইনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের মতো যেসব জায়গায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়োগের কথা রয়েছে সেসব জায়গা নির্বাহী বিভাগের 'প্রভাব বলয়ের' বাইরে থাকা উচিত।
বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম/এটি/এসকে/২০৫৫ঘ.