সোমবার ঢাকার বিশেষ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল।
তবে স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি আজাদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় এবং অপর দুই আসামি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তা ডা. ইউনুস আলী ও ডা. দিদারুল ইসলাম হজে যাওয়ায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
এজন্য আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর আবেদন করলে ওই আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন আগামী ১৪ অগাস্ট ধার্য করেন।
এছাড়া আইনজীবীরা আদালতকে জানান, সংশ্লিষ্ট আদালতের অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
অর্থ আত্মসাতে দুদকের দায়ের করা এ মামলায় মোট আসামি ছয়জন।
২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী এ মামলা করেন।
মামলায় হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এতে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা না হলেও তদন্তে নাম আসায় অভিযোগপত্রে তাকে অন্তর্ভুক্ত হয়।
২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি আজাদ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এ বদলির আদেশ দেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ডা. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক ডা. মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান ও গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে সাহেদ কারাগারে এবং বাকিরা জামিনে আছেন।
এ মামলার অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্সের মেয়াদবিহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করার অভিযোগ আনা হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদে ছিলেন ডা. আজাদ। সরকারি চাকরির বয়স শেষ হওয়ার পরও তাকে চুক্তিতে নিয়োগ দিয়ে ওই পদে রেখেছিল সরকার।
কিন্তু দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ হতে থাকলে বিপাকে পড়তে হয় ডা. আজাদকে। মাস্ক কেলেঙ্কারির পর করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ার ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণ ও জালিয়াতির খবর ফাঁস হলে তিনি তোপের মুখে পড়েন। এরপর গতবছরের ২১ জুলাই তিনি পদত্যাগপত্র দেন।
তার আগে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, অনিয়মের নানা অভিযোগ তখন সামনে আসতে থাকে।