সহসা গ্যাস ফিরছে না কামরাঙ্গীরচরে

এক সপ্তাহ ধরে ভুগতে থাকা কামরাঙ্গীরচরবাসীর সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা, তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে গ্যাস পাওয়ার কোনো আশা তারাও দিতে পারছেন না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2022, 06:34 AM
Updated : 17 May 2022, 06:34 AM

ওই এলাকায় বৈধ সংযোগের চেয়ে অবৈধ সংযোগ কয়েক গুণ বেশি হওয়ায় এবং বৈধদেরও বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে রেখেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গত ১০ মে থেকে চলছে এ অবস্থা, ফলে কামরাঙ্গীরচর বিতরণ লাইনের অন্তর্ভুক্ত এলাকার বাসিন্দাদের রান্না খাওয়া নিয়ে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।

এলাকাবাসীর সমস্যা সমাধানে সোমবার তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে স্থানীয় কাউন্সিলররা। সেখানে তিতাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বকেয়া বিল আদায় এবং অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেই ওই এলাকায় বৈধদের গ্যাসের সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

কামরাঙ্গীরচর এলাকায় লাখো মানুষের বাস। তিতাস গ্যাসের ওই জোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেখানে বৈধ গ্রাহক ১২ হাজার; অথচ সংযোগ এক লাখেরও বেশি।

অর্থাৎ প্রায় ৯০ হাজার গ্রাহক অবৈধভাবে সংযোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি বৈধ গ্রাহকদের ৮৩ কোটি টাকার বিল বকেয়া বলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহর ভাষ্য।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল (সোমবার) তিতাসের এমডির সঙ্গে একটা মিটিং হয়েছে। সেখানে তারা বলেছে আগামী ১৯ তারিখ কামরাঙ্গীরচরে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় করা হবে।”

কী নিয়ে মত বিনিময় করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তিতাসের অনেক টাকা বকেয়া। এর বাইরে প্রচুর অবৈধ সংযোগ। তিতাস বলেছে, তারা আগে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে। তারপর বকেয়া আদায়ে তৎপর হবে।”

১৯ তারিখের ওই বৈঠকের আগে গ্যাস সংযোগ ফেরার কোনো সম্ভাবনা আছে কী না জানতে চাইলে কাউন্সিলর বলেন, “১৯ তারিখের পরে কবে ফিরবে সেটাও বলা যাচ্ছে না। তিতাসের বক্তব্যে যুক্তি আছে। তারা যখন বলেছে মত বিনিময় করবে, দেখা যাক, আর এভাবেতো চলতে পারে না। অবৈধ সংযোগ থাকবে আবার বৈধরা বিল দেবে না– এটাতো ঠিক নয়।”

হাজারীবাগ মডেল টাউন এলাকার গৃহিনী আলেয়া সুলতানা জানান, গ্যাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর প্রথম দিন তারা বাইরে থেকে খাবার এনে খেয়েছেন। কিন্তু এরপরও যখন গ্যাস ফিরল না, প্রথমে কেরোসিনের স্টোভে, পরে সিলিন্ডার কিনে রান্নার কাজ চালাতে হচ্ছে তাদের।

গ্যাস না থাকায় স্থানীয় খাবার হোটেলগুলোও খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানালেন অটোরিকশাচালক মো. আতাহার। আর স্থানীয় আল-আমিন হোটেলের কর্মচারী রাশেদ মিয়া বললেন, ছয় দিন ধরে তাদেরও সিলিন্ডারের গ্যাসে রান্না করতে হচ্ছে, খাবারের দাম সে কারণেই বেড়েছে।  

এভাবে এত মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা সাদিউর রহমান বলেন, “আমি ভাড়া থাকি। আমি তো প্রতি মাসে বাড়িওয়ালাকে গ্যাসের বিল দিচ্ছি। আমার তো জানার কথা নয়, সংযোগ অবৈধ? নাকি বিল বকেয়া আছে? আমি তো ভোগান্তিতে আছি।”

স্থানীয় সংসদ সদস্য, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামও এর সুরাহা করার আশ্বাস দিয়েছেন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেছেন, তার এলাকার কাউন্সিলররা বিষয়টা দেখছেন। তিনি নিজেও তিতাসের এমডির সঙ্গে কথা বলেছেন।