করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে নয় মাস পিছিয়ে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার অংশ নেবে ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী।
Published : 27 Oct 2021, 03:17 PM
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের পরীক্ষার আয়োজন নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আগের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে সারা দেশে মোট ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে।
এবার যারা পরীক্ষা দেবে, তাদের মধ্যে ১৮ লাখ ৯৯৮ জন আট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি, ৩ লাখ ১ হাজার ৮৮৭ জন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ভকেশনাল পরীক্ষার্থীয় বসবে।
>> ২৯ হাজার ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবে।
>> ২০২০ সালের সঙ্গে তুলনা করলে এ বছর রীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন, বা ৮ দশমিক ৭৬%
>> এসএসসিতে ৫ লাখ ৬ হাজার ৮৩১ জন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে, ৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৫ জন মানবিক থেকে এবং ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮২ জন বাণিজ্য বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেবে।
>> এ বছর বিদেশে ৯টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। জেদ্দা, রিয়াদ, ত্রিপলী দোহা, আবুধাবী, দুবাই, বাহরাইন, ওমানের সাহাম, গ্রিসের এথেন্স কেন্দ্রে ৪২৯ জন পরীক্ষায় বসবে।
মহামারী পরিস্থিতির কারণে এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কেবল তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বাংলা, ইংরেজির মত আবশ্যিক বিষয়গুলোতে পরীক্ষা না নিয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেছিলেন, এসএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি এবং এইসএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক বিষয়গুলোর নম্বর দেয়া হবে। এসব বিষয়ে কোনো অ্যসাইনমেন্ট নেওয়া হচ্ছে না।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে গত বছরের মার্চে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কয়েক দফা উদ্যোগ নেওয়ার পর শেষ পর্যন্ত এ বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে ফেরানো সম্ভব হয়। এই দেড় বছরে কোনো পাবলিক পরীক্ষায় বসতে পারেনি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
গত বছর মহামারীর আগে এসএসসি পরীক্ষা হয়ে গেলেও এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে ফেব্রুয়ারির পরীক্ষা পিছিয়ে এসেছে নভেম্বরে।
মানতে হবে যেসব নিয়ম
>> পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে।
>> ‘অনিবার্য কারণে’ কোনো পরীক্ষার্থীকে এর পরেও হলে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ একটি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে ওই দিনই শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।
>> ট্রেজারি থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সকল সেট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
>> ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্ধারিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিটি আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে।
>> কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু কেন্দ্র সচিব মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন, তবে ‘ছবি তোলা যায় না’- এমন ফোনই তিনি ব্যবহার করবেন।
>> পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।
>> সব বিষয়ে পরীক্ষা না হবার কারণে পরীক্ষার ব্যয় কমে যাওয়ায় পরীক্ষার্থীদের ফরমপূরণে অর্থের বাড়তি অংশ ফেরত দেওয়া হবে।
>> সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে/সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
>> সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অভিভাবকদেরও অনুরোধ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
>> দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্ৰুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থী এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ১০ মিনিট সময় পাবে।
>> প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি) পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে। শিক্ষক/অভিভাবক/সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় তাদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকবে।
১৪ নভেম্বর সকালে বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরদিন ১৫ নভেম্বর সকালে বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, বিকালে হিসাব বিজ্ঞান পরীক্ষা হবে।
১৬ নভেম্বর সকালে রসায়ন (তত্ত্বীয়), ১৮ নভেম্বর সকালে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া (তত্ত্বীয়), ২১ নভেম্বর সকালে ভূগোল ও পরিবেশ এবং বিকালে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষা হবে।