ওই কারখানার মূল কোম্পানি সজীব গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন দাবি করেছেন, আগুন নেভানোর ‘কিছু সরঞ্জাম’ হাসেম ফুডস কারখানায় ছিল, তাই দিয়ে শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ‘চেষ্টাও’ তারা করেছিলেন।
আর কিশোর-কিশোরীদের কারখানার কাজে লাগানোর অভিযোগের বিষয়ে তার ভাষ্য, কম বয়সী যারা আছে, কাজ নেওয়ার সময় তারা বয়স ‘আঠারোই বলেছে’।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় সজীব গ্রুপের ওই কারখানায় সেজান জুস, নসিলার মত জনপ্রিয় পণ্য এবং সেমাই, চানাচুর, ক্যান্ডি এবং বিভিন্ন ধরনের বেভারেজ ও খাদ্যপণ্য তৈরি হয়।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে কারখানার ছয় তলা ভবনে ভয়াবহ আগুন লাগে; ২৪ ঘণ্টা পরও তা পুরোপুরি নেভানো যায়নি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই ৩ জনের মৃত্যুর কথা স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছিল। শুক্রবার দুপুরে পোড়া কারখানা থেকে বের করে আনা হয় আরও ৪৮ জনের মৃতদেহ।
আগুন যখন লাগে, তখন ওই কারখানায় ১৮০ থেকে ১৯০ জনের মতো কাজ করছিল বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফেঅর ডটকমের প্রশ্নের জবাবে জানান সালাহ উদ্দিন।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক অপারেশন্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান বিকালে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটির আয়তন প্রায় ৩৫ হাজার বর্গফুট। ওই ভবনের জন্য অন্ততপাঁচটি সিঁড়ি থাকা দরকার ছিল, কিন্তু ছিল মাত্র দুটি।
তার মধ্যে একটি সিঁড়ি দিয়ে ছাদে ওঠার পথ আবার ঘটনার সময় তালাবন্ধ ছিল। তা না হলে অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত বলে মন্তব্য করেন ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক দেবাশিষ বর্ধন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সজীব গ্রুপের কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন বলেন, “ফায়ার এক্সটিংগুইশার, হোস পইপ বক্স ছিল, এসব দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়েছিল।”
তবে কোথা থেকে আগুন লেগেছিল তা এখন পর্যন্ত বোঝা যায়নি বলে এ কর্মকর্তার ভাষ্য।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের সময় ভেতরে আটকা পড়া শ্রমিকদের স্বজনরা সকাল থেকেই ভিড় করেন কারখানার বাইরে। পরে অনেকে ঢাকা মেডিকেলের মর্গেও যান। তাদের সঙ্গে কথা বলে অন্তত দশজন শ্রমিকের তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের বয়স ১৪-১৬ বছরের মধ্যে ছিল।
অগ্নিকাণ্ডের সময় ডিউটিতে ছিলেন না এমন একজন ১৬ বছরের কিশোরী কর্মীর সঙ্গেও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, তার মত আরও অনেকেই হাসেম ফুডসে চাকরি করে।
আর নূর আলম নামে কারখানার একজন নিরপত্তাকর্মী বলেছেন, শ্রমিকদের মধ্যে ‘অল্প বয়সী’ অনেককেই তিনি দেখেছেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সালাহ উদ্দিন বলেন, “কিছু আছে হেলপারি করার জন্য। কিন্তু ওরা কাজ নেওয়ার সময় আমাদের কাছে যে ডকুমেন্টস দিয়েছে, সেখানে ১৮ বছর পূর্ণ রয়েছে। কিছু ছেলেদের দেখলে মনে হতে পারে ১৮ বছরের কম হতে পারে। কিন্তু ডকুমেন্টস দিয়ে (১৮ বছর) ভর্তি হয়েছে।”