ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থলে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা ৪৮টি বডিব্যাগে মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি ময়নাতদন্তের জন্য।”
ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক দেবাশিষ বর্ধন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছয় তলা কারখানা ভবনের উপরের দুই ফ্লোরে এখনও আগুন জ্বলছে।
“নেভানোর কাজ এখনও চলছে। এ পর্যন্ত ৪৮ জনের মৃতদেহ পেয়েছি। আমাদের সার্চ এখনও শেষ হয়নি।”
উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় ওই কারখানায় বৃহস্পতিবার বিকালে আগুন লাগার পর রাতে তিনজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন।
দুপুরে লাশ উদ্ধারের আগে স্বজনদের বক্তব্যের ভিত্তিতে ৪৭ জন নিখোঁজ শ্রমিকের তালিকা করেছিল রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত বলেন, “অনেক লাশ শনাক্ত করার মত অবস্থায় নেই। সেগুলো ঢাকা মেডিকেলের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য বলা হবে।”
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সেখানে আগুন লাগার পর মুহূর্তে আগুনের শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ছয়তলা ওই কারখানার নিচতলা, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আগুন জ্বলতে থাকে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন জানান, তাদের ১৮টি ইউনিট সারা রাত কাজ করে ভোরের দিকে আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে এনেছিল। কিন্তু সকালে ভেতরে আবার আগুন বেড়ে যায়।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে ছয় তলা কারখানা ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার সামনের দিকে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
সজীব গ্রুপের এ কারখানার ওই অংশে সেমাই কারখানা ও গুদাম এবং কার্টনের গুদাম রয়েছে। এছাড়া নিচের ফ্লোরগুলোতে সেজান জুসসহ কোমল পানীয় এবকং খাদ্যপণ্য তৈরি হত বলে কর্মীরা জানিয়েছেন।
এছাড়া রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর আরেকজনের মৃত্যু হয়। তার নাম মোরসালিন (২৮) বলে জানিয়েছেন মেডিকেল পুলিশ ফাড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
মোরসালিনের বাড়ি দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার উত্তর সুবেদপুর গ্রামে। বাবার নাম আনিসুর রহমান। এক ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি বড় ছিলেন।
আগুন কীভাবে লাগল- সে বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারেননি।
কারখানার উপমহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, “গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে।”
এছাড়া নাহিদ, মঞ্জুরুল ইসলাম, মহসীন হোসেন, আবু বকর সিদ্দিক, আমেনা বেগম ও ফাতেমা আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নারায়ণগঞ্জ থেকে ছয়জনকে আনা হয়, তাদের মধ্যে তিনজনের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট হওয়ায় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।”
আহত আবু বকর জানান, কারখানায় আগুন লাগার পর বাঁচার জন্য ভবন থেকে লাফ দিয়েছিলেন তিনি, তখনই আহত হন।
আগুনে কারখানাটির বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য নষ্ট হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরুপণ করা যায়নি।
পুরনো খবর