ঢাকার খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে ‘বন্দুকযুদ্ধে দুই ছিনতাইকারী’ নিহত

ঢাকার খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত হয়েছেন, যারা অটোরিকশায় করে ‘ছিনতাই করতেন’ বলে পুলিশের ভাষ্য।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 07:32 AM
Updated : 18 May 2021, 07:45 AM

মঙ্গলবার ভোর রাত পৌনে ৩টার দিকে খিলক্ষেত ফ্লাইওভারের ওপর পুলিশ চেকপোস্টে ওই ঘটনার সময় আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান জানান।

তিনি বলেন, “খিলক্ষেত থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের সমন্বিত একটি দলের সঙ্গে অটোরিকশায় থাকা সশস্ত্র ছিনতাইকারী দলের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলি হয়।”

ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, মাদক ও ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

নিহতরা হলেন, রাসেল (৩০) ও এনামুল (৩৬)। আটক দুজনের মধ্যে একজন নয়ন এবং অন্যজনের নাম ইয়ামিন।

উপ-কমিশনার মশিউর বলেন, রাত সোয়া ২টার দিকে কাওলা হয়ে পূর্বাচলগামী ফ্লাইওভারের মুখে ডিবি পুলিশের একটি দল সবুজ রঙের একটি অটোরিকশাকে থামার সংকেত দেয়। কিন্তু গাড়ি না থামিয়ে চালক দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করে।

বিষয়টি ফ্লাইওভারের মাঝামাঝি থাকা চেকপোস্টে পুলিশের আরেকটি দলকে জানিয়ে অটোরিকশার পিছু ধাওয়া করে গোয়েন্দা পুলিশের দলটি। চেকপোস্টে থাকা দলটি তখন আড়াআড়ি মাইক্রোবাস রেখে ফ্লাইওভারের পথ আটকে দেয়।

“এসময় অটোরিকশা থেকে দুইজন নেমে দৌড়ে মাইক্রোবাসের দিকে গুলি ছুড়লে বাঁ পাশের কাচ ভেঙে যায়। আত্মরক্ষায় ডিবি পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।”

গোলাগুলি থামলে ফ্লাইওভারের উপরে পড়ে থাকা এনামুল ও রাসেলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

আর ফ্লাইওভারের ওপরে অটোরিকশার চালকের আসন থেকে নয়ন এবং পাশের আসন থেকে ইয়ামিনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান উপ-কমিশনার মশিউর।

তিনি জানান, নিহত ও গ্রেপ্তারদের তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি ম্যাগাজিন, একটি ছুরি, দুটি টাইগার বামের কৌটা, একটি গামছা, নয়টি মোবাইল ফোন, ১৬টি ইয়াবা, একটি লাইটার এবং নগদ ৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। 

গ্রেপ্তার দুজনের বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওই চারজন প্রথমে টঙ্গীর মধুমিতা এলাকায় একত্রিত হয়ে আব্দুল্লাহপুর খন্দকার পেট্রোলপাম্পে আসে। ছিনতাইয়ের জন্য সেখানে ‘উপযুক্ত মক্কেল’ না পেয়ে বিমানবন্দর হয়ে কাওলার দিকে রওনা দেয়।

“উদ্দেশ্য ছিল, পথে কোনো ব্যক্তিকে একা পেলে অটোরিকশায় তুলে তারা মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা এবং মূল্যবান সামগ্রীসহ সবকিছু ছিনিয়ে নেবে।”

ঈদের সময়টায় গভীর রাতেও মানুষ যাতায়াত করছেন জানিয়ে উপ-কমিশনার মশিউর বলেন, “গণপরিবহন না পেয়ে অনেকে অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও ছোট পিকআপেও উঠছেন। ছিনতাইকারীরা এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছিল।”

তিনি বলেন, “চক্রটি ছিনতাইয়ের কাজে মূলত গামছা এবং মলম ব্যবহার করত। কেউ বাধা দিলে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে ফেলে দিত। তারা ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যা এবং মাদকের একাধিক মামলার আসামি।”