ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে বাংলাদেশ ঝুলে থাকা প্রত্যাবাসন শুরুতে নতুন একটি প্রস্তাব মিয়ানমারকে দিতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় সচিব পর্যায়ের এই বৈঠক শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্য দিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার লু জাওহুই এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব উ চান আয়ে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
রোহিঙ্গাদের আস্থা ফেরানোর জন্য গ্রামভিত্তিক প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তাব বৈঠকে দেওয়া হবে বলে সোমবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “গ্রামভিত্তিক অ্যাপ্রোচ যদি আমরা নিই, সেটা বোধহয় মোর প্র্যাকটিক্যাল হবে।
“পার্টিকুলার এরিয়া থেকে যারা ভেরিফাইড হল, তাদেরকে যদি ফেরা নিশ্চিত করি, এটাকে যদি আমরা পাইলট হিসাবে গণ্য করি, এভাবে যদি ইউনিট বাই ইউনিট আগাই, তাহলে মোর প্র্যাকটিক্যাল হবে।”
২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ক’দিন আগেও বলেছিলেন, আলোচনা চালিয়ে গেলেও মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে না।
প্রত্যাবাসন আটকে থাকার মধ্যে মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে নিয়ে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার কথা বলে আসছে দুই দেশের ’ভালো বন্ধু’ চীন।
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে ৮ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ; যার মধ্যে মাত্র ৪২ হাজার জনকে ভেরিফিকেশন করার কথা জানিয়েছে তাদের আবাসস্থল মিয়ানমার।
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, “ভেরিফিকেশনের পর আমাদেরকে যদি জানায়, এই লোকগুলো নিচ্ছি, সেটার উপর ভিত্তি করে কিন্তু অ্যাকচুয়াল মুভমেন্টটা হবে।”
আস্থা ফেরাতে জাতিসংঘের পাশাপাশি মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সহযোগী রাষ্ট্রগুলোকে রাখাইনের বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করার কথাও তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ।
তিনি বলেন, “সেখানে যদি শুধু মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ থাকে, তার থেকে আমরা মনে করি, সেখানে যদি অন্যরা থাকে, ইউএন বা তার এজেন্সিজ, গ্রাউন্ডে যারা আছেন… চাইনিজরা যেহেতু পুরো জিনিসটাই গ্যারান্টার বা ব্রোকার হিসাবে দেখা দিচ্ছে, সুতরাং চাইনিজদেরও একটা ইনভল্ভমেন্ট আমরা আশা করব।
“আসিয়ানের উইং যেটা আছে, তারা যদি ইনভলভড হয়, তারা যদি থাকে খুব ভালো হয়। এছাড়া ভারত-জাপান, কোরিয়া, তারাও যদি থাকে… তাদের প্রেজেন্স ইন সাম ফর্ম, তাহলে এই রোহিঙ্গারা কনফিডেন্স পাবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটা বাস্তবায়ন করা যাবে।”