মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব: মোমেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, আলোচনা চালিয়ে গেলেও মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে না।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2021, 02:12 PM
Updated : 10 Jan 2021, 02:12 PM

রোববার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

মোমেন বলেন, “মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র, তাদের সাথে আমাদের আলাপ হয়েছে। তারা বারবার বলেছে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। কখনও বলে নাই নিবে না।

“আমরা বলেছি, এদের তোমরা নিয়ে যাও। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারাও উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির কথা বলেছে।”

প্রতিশ্রুতি দিলেও তিন বছরেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ার জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তাদের আন্তরিকতার অভাবের কারণের একটি রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি।”

তারপরও প্রত্যাবাসন শুরুর আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা মিয়ানমারের সাথে নিয়মিত আলাপ-আলোচনা করছি।

“আমরা তাদের বলেছি তোমাদের উন্নয়ন হচ্ছে, আমাদেরও উন্নয়ন হচ্ছে। তোমাদের জন্য তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাও। এ এলাকায় অশান্তি তৈরি হলে তোমাদের ও আমাদের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। সকলের মঙ্গলের জন্য রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বলেছি।”

রোহিঙ্গারা যে ফেরত যেতে চায় না, সে বিষয়ে মোমেন বলেন, “তারা যায় না কেন? কারণ তারা তাদের সরকারকে বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস বাড়ানোর জন্য মিয়ানমারকে তিন ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

“তাদের বলেছি মিয়ানমারের সরকারি কর্মচারী বা নেতাদের রোহিঙ্গাদের সাথে এসে আলাপ আলোচনা করে বিশ্বাস জন্মানোর জন্য, এছাড়া রোহিঙ্গাদের মাঝি (নেতা) রাখাইনে নিয়ে নিরাপত্তা দেখাতে। এতে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে। তারা হ্যাঁ-না কোনো উত্তর দেয় না।”

আন্তর্জাতিক সমর্থন বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রতিবেশী ভারত, চীন, থাইল্যান্ড অনেকের কাছে গিয়েছি। সবাই বলেছে, এ সমস্যা মিয়ানমারের। স্থায়ী সমাধান হচ্ছে- রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে মিয়ানমারে ফেরত নেওয়া।

“জাপানও আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। জাপানের প্রচুর বিনিয়োগ আছে মিয়ানমারে। তারাও বলছে, মায়ানমারকে বোঝাবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা সবাই বলছে ফেরত নেওয়ার কথা। সে হিসেবে আমরা ড্রাইভিং সিটে আছি।”

অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. এমদাদুল ইসলামের লেখা ‘রোহিঙ্গা : নিঃসঙ্গ নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী’ এবং ‘শেষ সীমান্তের পর কোথায় যাব আমরা’ বই দুটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের সম্পাদক রুশো মাহমুদ, দক্ষিণ কোরিয়ার অনারারি কনসাল মোহাম্মদ মহসিন ও বই ‍দুটির লেখক এমদাদুল ইসলাম।