পি কে হালদারের সাত ‘সহযোগী’কে দুদকে তলব

প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ‘পাচার করে’ বিদেশে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) সাত ‘সহযোগী’কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2021, 01:05 PM
Updated : 5 Jan 2021, 01:05 PM

মঙ্গলবার দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের স্বাক্ষরে পৃথক নোটিসে তাদেরকে আগামী ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি সেগুনবাগিচায় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়।

দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ও সাবেক পরিচালক আরেফিন সামসুল আলামিনকে ১১ জানুয়ারি দুদকে তলব করা হয়েছে।

নেচার এন্টার প্রাইজ ও এমটিবি মেরিন লিমিটেডের দুই মালিক নওশের উল ইসলাম ও মমতাজ বেগমকে ১২ জানুয়ারি, এমটিবি মেরিন লিমিটেডের মালিক সনজিব কুমার হাওলাদারকে ১২ জানুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়।

এমটিবি মেরিন লিমিটেডের আরেক মালিক বাসুদেব ব্যানার্জী এবং নেচার এন্টারপ্রাইজের মালিক পাপিয়া ব্যানার্জীকে ১৩ জানুয়ারি তলব করা হয়েছে।

প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)

দুদকে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের এমডি থাকা অবস্থায় তার আত্মীয় স্বজনকে আরও বেশ কয়েকটি লিজিং কোম্পানির ইনডিপেন্ডেন্ট পরিচালক বানান এবং একক কর্তৃত্বে পিপলস লিজিংসহ বেশ কয়েকটি লিজিং কোম্পানির টাকা বিভিন্ন কৌশলে বের করে আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, পিপলস লিজিংয়ে আমানতকারীদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে আত্মসাৎ করেন এবং এই কোম্পানিকে পথে বসিয়েছেন পি কে হালদার। তিনি এসব কোম্পানির স্থাবর সম্পদ বিক্রি করে দেন এবং আমানতকারীদের শেয়ার পোর্টফোলিও থেকে শেয়ার বিক্রি করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন।

 দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, এ সংক্রান্ত বিষয়ে পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ প্রশান্ত কুমার হালদার সংশ্লিষ্ট লিজিং কোম্পানি থেকে নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিএফআইইউ থেকে পি কে হালদার ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

এর আগে একই অভিযোগে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের পরিচালক ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নিজামুল আহসান, পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ ইসমাইলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

এদিকে মঙ্গলবার পি কে হালদারের প্রতারণার সহায়তাকারী অভিযোগে ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।

তাদের মধ্যে পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও সাবেক সচিব ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের চেয়ারম্যান এন আই খানও রয়েছেন।