গোপালগঞ্জ জেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হামিদুল শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
Published : 22 Dec 2020, 02:00 PM
তারা হলেন- রবিউল শরীফ রবি (৫৭), আমির মোল্লা (৩৫) ও সাগর।
রবি ও আমির মোল্লা ইউপি সদস্য হামিদুলের গ্রামেরই বাসিন্দা জানিয়ে সিআইডি কর্মকর্তারা বলেছেন, মূলত গ্রামের রাজনীতি ও ক্ষমতার লড়াইকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গোপালগঞ্জের গোপিনাথপুর হাই স্কুলের কাছে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন হামিদুল (৪৫)।
সোমবার রবি শরীফকে ঢাকার পাটুয়াটুলী থেকে গ্রেপ্তার করার পর মঙ্গলবার ঢাকায় সিআইডি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত জানানো হয়।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। আধুনিক তদন্ত কলাকৌশল ব্যবহার করে সিআইডি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল মালিক ও চালক আমির মোল্লাকে সনাক্ত করে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, কারিগরি তথ্য, রূপসা সেতুর টোল প্লাজার সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ থেকে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
আমির ও রবির বাড়ি গোপালগঞ্জে হলেও তারা থাকেন যশোরে।
আমিরকে যশোর থেকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রবিকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয় গোপালগঞ্জ থেকে।
মুক্তা ধর বলেন, রবি ও আমির দীর্ঘদিন যশোরে বসবাস করেন। যদিও তাদের গ্রামের বাড়ি নিহত মেম্বারের এলাকায়। তারা দুজন মোটরসাইকেলে গোপালগঞ্জ এসে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে চলে যান।
গোপিনাথপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান লাচ্চু শরীফের সঙ্গে ইউপি সদস্য হামিদুলের দ্বন্দ্বের সুযোগে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে তার দায় লাচ্চু শরীফের উপর চাপানোর পরিকল্পনা রবি করেছিলেন বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা মুক্তা।
“স্থানীয় চেয়ারম্যান (লাচ্চু শরীফ) আমির মোল্লাকে একটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছিল। আর হামিদুলসহ কয়েক ইউপি সদস্য মিলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল। এই সুযোগে আমির ইউপি সদস্য হামিদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ভাবে যে এতে চেয়ারম্যানকে হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করা যাবে। আর রবি এতে যুক্ত হয় এই কারণে যে হামিদুল মারা গেলে সে পরবর্তীতে মেম্বার হতে পারবে।”
গোপিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাচ্চু শরীফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় বলেন, “আমির মোল্লাকে আমি চিনি না, সুতরাং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর প্রশ্নই আসে না। তবে রবি শরীফকে চিনি, সে হামিদুল শরীফের পাশের বাড়ির বাসিন্দা।”
হামিদুলসহ কয়েকজন ইউপি সদস্য মিলে অনাস্থা আনছে বলে যে কথা সিআইডি কর্মকর্তারা বলেন, তা অস্বীকার করেছেন লাচ্চু শরীফ।