চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে ফিলিপিন্সের সহযোগিতার আশা রাষ্ট্রপতির

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চুরি যাওয়া রিজার্ভের বাকি অর্থ উদ্ধারে ফিলিপিন্সের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বঙ্গভবন প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2020, 03:41 PM
Updated : 28 Oct 2020, 03:41 PM

বুধবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রদূত ভিনসেন্তে ভিভেনসিও টি বান্দিলো বঙ্গভবনে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে গেলে রাষ্ট্রপতি একথা বলেন।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে খোয়া যাওয়া অর্থ উদ্ধারে সহায়তার জন্য ফিলিপাইন সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান এবং অবশিষ্ট অর্থ উদ্ধারেও ফিলিপাইনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।”

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।

এর মধ্যে একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।

বাকি চারটি মেসেজের মাধ্যমে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপিন্সের মাকাতি শহরে রিজল কমার্সিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে।

অল্প সময়ের মধ্যে ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়, ফিলরেম মানি রেমিটেন্স কোম্পানির মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে সেই অর্থ চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে।

এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হলেও বাকি অর্থ উদ্ধারে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ওই টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তারও কোনো হদিস মেলেনি।

রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে হেরে যায়।

প্রেস সচিব জানান, ফিলিপিন্সের বিদায়ী দূতের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। স্বাধীনতার পর পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম সারির দেশগুলোর অন্যতম ফিলিপিন্স। জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রেও ফিলিপিন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ পোশাক, ওষুধসহ বিশ্বমানের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে এবং এসব পণ্যের দামও তুলনামূলক কম। ফিলিপিন্স এসমস্ত পণ্য আমদানির মাধ্যমে লাভবান হতে পারে।

বাংলাদেশ ও ফিলিপিন্স মধ্যে নার্সিং ও কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এর ফলে পারস্পরিক সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি পাবে এবং উভয় দেশই এর মাধ্যমে উপকৃত হবে।

রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে ফিলিপিন্সের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন ফিলিপাইন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানেও এ ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা রাখবে।

রাষ্ট্রপতি সফলভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। বিদায়ী দূত এসময় বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে সার্বিক সহযোগিতার জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।