জার্মানি, ইতালি, কানাডার ‘জাল ভিসা-পাসপোর্ট বানিয়ে দেন’ তিনি

সিলেট থেকে মানবপাচারের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি জার্মানি, ইতালি, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের জাল পাসপোর্ট বানিয়ে তাতে ভুয়া ভিসা লাগিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2020, 04:39 PM
Updated : 28 Sept 2020, 08:24 PM

মাসুম আহমদ (৩১) নামের এই যুবককে রোববার রাতে সিলেটের কানাইঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ও র‌্যাব-১৪ এর সদস্যরা।

মাছুম কানাইঘাট এলাকার মো. আতাউর রহমানের ছেলে। এনএসআইয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিজের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাব-১৪ এর কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের জানান।

সোমবার বিকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা সদরে র‌্যাব ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মাসুমের কাছ থেকে জাল পাসপোর্টের ফটোকপি এবং তুরস্কের ভুয়া ভিসার জন্য ব্যবহৃত ‘অ্যাম্বুস সিল’ তৈরির মেশিনসহ অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
র‌্যাব কর্মকর্তা রফিউদ্দীন বলেন, “ফিলিস্তিন দূতাবাস অভিযোগ জানানোর পর মাসুমের বিরুদ্ধে নকল পাসপোর্ট তৈরি করে জার্মানি, নিউ জিল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, রোমানিয়া, ইতালি, ইসরায়েল, গ্রিস, মালয়েশিয়া, কানাডা, তুরস্ক, ক্যামেরুন প্রভৃতি দেশে মানবপাচারের তথ্য জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাবের নজরে আসে। এর প্রেক্ষিতে র‌্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার বিরুদ্ধে নকল পাসপোর্ট তৈরি করে বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়।”

তিনি বলেন, “মাসুমসহ বাংলাদেশের এক শ্রেণির অসাধু দালাল চক্র স্বল্প আয়ের মানুষদের প্রলোভন দেখিয়ে আন্তর্জাতিক চক্রের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবৈধভাবে মানবপাচার করে আসছিল। সে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট তৈরি করে দুই হাজার ইউরো করে বিক্রি করত।

“এছাড়া সে বিভিন্ন দেশের ভিসার নকল স্টিকার বানিয়ে ভুয়া ভিসা দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে মানবপাচার করে আসছিল।”

বাংলাদেশিদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের নাগরিকদেরও মাসুম অন্যান্য দেশের ভুয়া পাসপোর্ট-ভিসা করে দিত জানিয়ে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, “সম্প্রতি সে ভিয়েতনামের এক নাগরিককে পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে, যা তার মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডে পাওয়া গেছে।

“সে নেপাল, দিল্লি, সৌদি আরব, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া রুট দিয়ে একটি চক্রের মাধ্যমে মানবপাচার করে থাকে।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে মানবপাচার বন্ধ থাকায় মাসুম ‘চোরাইপথে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে মোবাইল চোরাচালান করেছেন’ বলে জানান তিনি।

“তার কাছে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের কাগজ পাওয়া গেছে, যেগুলোতে বেশ ভালো অংকের টাকা রয়েছে,” বলেন র‌্যাব কর্মকর্তা রফিউদ্দীন।