সংকটে পড়া শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১২ জুন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক সদস্যের কমিটি গঠন করেছে, কিন্তু প্রতিবেদন জমার সময় বেঁধে দেয়নি। সেই কমিটির প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ হয়নি।
কয়েক দিন আগেই বাড়ি ভাড়া পুরোপুরি পরিশোধ না করায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নীরব আহমদের সনদসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ফেলে দেন বাড়িওয়ালা কলাবাগানের ওয়েস্ট এন্ড স্ট্রীটের রুরি ভবনের মালিক অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মুজিবুল হক। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি।
পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যার কোনো ছাত্রাবাস নেই। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা আশপাশের এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে অথবা মেসে থাকতে বাধ্য হন।
মহামারীর শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর তারা বাড়ি চলে যান। দীর্ঘ দিন এসব বাসা বা মেসে তারা না থাকলেও বাড়িভাড়া পুরোটাই দিতে হচ্ছে। এদের অনেকেই টিউশনি করে খরচ যোগাতেন। বাড়ি চলেও যাওয়ায় সেটা বন্ধ। এর মধ্যে অনেকে কিছু টাকা পরিশোধ করে বাসা ছেড়ে দিতে চাইলেও বাড়িওয়ালারা তাতে রাজি হচ্ছেন না।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাড়িওয়ালা পুরো ভাড়া না দিলে বাসা ছাড়তে দিচ্ছে না। এ মূহূর্তে আমার পক্ষে ১২ হাজার টাকা দেওয়াও সম্ভব না। বাসা ছাড়তে না পারায় দিন দিন ভাড়া জমতেই আছে।”
লক্ষ্মীবাজারে ব্যবসায়ী মাহবুব আলমের বাসায় ভাড়া থাকেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ইমরান হোসাইন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাড়িওয়ালাকে ভাড়াটা অর্ধেক করতে বলেছিলাম। কিন্তু রাজি হয়নি। অনিশ্চিয়তার কারণে অনেকে বাসা ছাড়তেও পারছে না, থাকতেও পারছে না।”
বাড়ি ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সংকট সমাধানের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নূর মোহাম্মদকে দায়িত্ব দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার প্রতিবেদন তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে।
ড. নূর মোহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কোভিড-১৯ এর কারণে অনেকের সমস্যা বেড়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা যেসব সমস্যায় পড়েছে তা তুলে ধরে সমাধানের সুপারিশ করা হবে।”
শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমস্যা সমাধানে আপদকালীন কোনো পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেয়নি বলে জানান উপাচার্য মীজানুর রহমান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, হাজার হাজার শিক্ষার্থীর কেউ মেসে নাই। কারা সমস্যায় আছে সে তালিকা করতে হবে৷ একটা ‘লং টাইম প্ল্যান, নিয়ে আগাতে হবে। যারা টিউশন করে চলতো তারা তো বিশ্ববিদ্যালয় যখন খুলবে, তখন টিউশনও পাবে না৷ সেজন্যও ‘সাপোর্ট’ দিতে হবে।
"যদি আমরা নির্দিষ্ট করতে পারি কতজন ছাত্রের সাপোর্ট দরকার, সেরকম সুপারিশ আসলে আমাদের যতরকম ব্যয় আছে যা এখন লাগছে না, তা থেকে যা বাঁচছে, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই মিলে ফান্ড তৈরি করে তাদের সাপোর্ট দেওয়া হবে। সবাইকেই যদি হেল্প করতে হয়, তাহলে হেল্পের পরিমাণ এতই কমে যাবে যে কারোরই কোন উপকার হবে না।"