রোববার ভোর ৪টায় জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের মহুরুল গ্রামে নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু ঘটে নিভৃতচারী এই শিক্ষকের।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা ফয়সল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অধ্যাপক মজিবর রহমানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও জ্যেষ্ঠ সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
সোমবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাষ্ট্রীয় সালাম দেওয়ার পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় এই বুদ্ধিজীবীকে।
অধ্যাপক মজিবর রহমানের জন্ম ১৯২৮ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত গণিতে পড়াশোনা শেষ করে তিনি বগুড়া ও কুমিল্লার দুটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। পরে মেলবোর্নে যান উচ্চতর শিক্ষার জন্য।
ফিরে এসে তিনি যোগ দেন করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে সেখান থেকে চলে আসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, যোগ দেন গণিত বিভাগে।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশের অনেক হিন্দু যখন জীবন বাঁচাতে মুসলমান নাম নিচ্ছিলেন, তখন নিজের নাম পরিবর্তন করে ‘দেবদাস’ রাখেন মজিবর রহমান।
এরপর মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হল থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী। তাদের বর্বরতায় অধ্যাপক দেবদাস মানসিক ভারসাম্য হারান। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি অধ্যাপনা থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যান ১৯৭৩ সালে।
অবসর গ্রহণের পর বাড়িতে একরকম নিভৃতেই দিন কাটছিল তার। পরে ১৯৯৭ সালে সাংবাদিক হাসিবুল আলম প্রধান তাকে খুঁজে বের করেন।
১৯৯৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগ তাকে সম্মাননা জানায়।
স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর ২০১৫ সালে এই গুণীকে একুশে পদক দিয়ে সম্মান জানায় সরকার।