হটলাইনকে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত করা এবং ত্রাণের জন্য ডেটাবেইজ তৈরি শেষে সপ্তাহখানেকের মধ্যে এমন একটি ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন।
রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে খাদ্যের কষ্টে মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ।
“আইসিটিমন্ত্রী এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে আজ আমরা সভা করেছি, রেজুলেশন হয়েছে, ইতোমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের খাদ্য সহায়তার বিষয়ে ৩৩৩ নম্বরকে সংযুক্ত করা হবে। ৩৩৩ নম্বরের সঙ্গে ত্রাণ মন্ত্রণালয় ‘কানেকটেড’ হয়ে গেলে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।”
ব্যবস্থাটি পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করতে সাতদিন লাগতে পারে জানিয়ে ডা. এনামুর বলেন, “সারা দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যেন কানেক্ট করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে। এটা বড় কাজ, দুয়েকদিনের মধ্যে সম্ভব নয়, এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
“বাংলাদেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি লম্বা সময় ধরে, অন্তত মে মাস পর্যন্ত এক্সটেন্ড করবে- এটা ধরে নিয়ে কাজ করছি।”
এই ব্যবস্থা চালুর জন্য আইসিটিসি বিভাগে ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের জন্য আলাদা লোকবলও নিয়োগ দিতে হবে বলে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান।
“আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এটা নিয়েও আলাচনা হয়েছে। তারা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছে, সোমবার থেকে এই কাজ শুরু হবে।”
৩৩৩ হটলাইনের মাধ্যমে সকল সরকারি সেবা প্রাপ্তির পদ্ধতির তথ্য প্রদান; বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সম্পর্কিত তথ্য প্রদান; সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের তথ্য প্রদান এবং সামাজিক সমস্যা প্রতিকারে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দাখিল নিয়ে তথ্যসেবা দেওয়া হয়ে থাকে। নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবাও দেওয়া হচ্ছে।
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ থাকার পরও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু হতদরিদ্র মানুষ ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য কারো খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন হলেই যেন ৩৩৩ হটলাইনে করে তা জানাতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
“কেউ ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে ত্রাণ চাইলে আমাদের বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি তা যাচাই করে ত্রাণপ্রার্থীর নিকটবর্তী যাদের অবস্থান হবে তারা তার বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেবে।”
করেনাভাইরাসের প্রাদুর্ভারে মধ্যে গত ২৬ মার্চ থেকে অফিস-আদালতে ছুটি চলছে, আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই ছুটি ঘোষণা করা আছে। আর তার আগে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউনের পরিধি আরও বাড়তে পারে।
এই লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বেশিরভাগ শ্রমজীবী। এমন পরিস্থিতিতে সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় ত্রাণ হিসেবে ৪৭ কোটি ৩৫ লাখ ৭২ হাজার ২৬৪ টাকা এবং ৯৪ হাজার ৬৬৭ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে।
সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ত্রাণ থেকে কেউ বঞ্চিত হলেও যাতে তাদের আওতায় আনা যায় সেজন্য ৩৩৩ হটলাইন নম্বরটিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে বলে জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর।