দিবসটি উপলক্ষে বুধবার সকাল ১০টায় রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে ‘হেল্প ফর ইউ নামে’ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয় সেই শোভাযাত্রা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বলেন, “সুস্থ থাকার জন্য হাঁটার বিকল্প নেই। একটি ইঞ্জিন যেমন ফেলে রাখলে অকেজো হয়ে যায়, তেমনি মানুষও যদি হাঁটাচলা না করে, সে মানুষ কিন্তু স্বাভাবিতভাবে জীবন-যাপন করতে পারে না। আমাদের যদি সুস্থ্য ও নীরোগ থাকতে হয়, তাহলে দুটো জিনিসকে গুরুত্ব দিতে হবে। তা হল- হাঁটা ও ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার।”
‘হেল্প ফর ইউ’ এর চেষ্টায় হাঁটা দিবস পালনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সচিব বলেন, “বর্তমানে এটা ছোট আকারে পালিত হলেও দিন দিন এটা আরও জনপ্রিয় হবে। সকল মানুষ এই হাঁটার যাত্রায় অংশীদার হবে। আগামীতে আমরা প্রতিবছর ১৯ ফেব্রুয়ারিকে আরও জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করতে পারব বলে আশা করি।”
হাঁটার গুরুত্ব তুলে ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ বলেন, “হাঁটা দিবস পালন নিয়ে অনেকে হয়ত হাসবে। কিন্তু বিষয়টির গুরুত্ব বোঝে না বলেই তারা হাসবে। যারা শারীরিক পরিশ্রম করে না, তাদের জন্য হাঁটা একটি উত্তম ব্যায়াম। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, ডায়াবেটিসমুক্ত থাকতে প্রতিনিদিন অন্তত আধা ঘন্টা নিয়মমাফিক হাঁটা উচিত।"
'হেল্প ফর ইউ' এর সভাপতি জান্নাতুল মাওয়া রুমা বলেন, “আমি হাঁটতে চাই, হাঁটাতে চাই। আমি কার্বনমুক্ত বিশ্ব গড়তে চাই। সুস্থ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমি ২০১৪ সাল থেকে এ যাত্রায় হাঁটছি।… সরকার এখন জাতীয়ভাবে হাঁটা দিবস পালনের অনুমতি দিয়েছে। আজকে থেকে আমরা এটি সরকারিভাবে পালন করছি।”
অন্যদের মধ্যে যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল করিম, জাতীয় গ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক হামিদুর রহমান তুষার, সাবেক ফুটবলার শেখ মো. আসলাম সমাবেশে বক্তব্য দেন।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া রুমা ২০০৭ সালে গড়ে তোলেন ‘হেল্প ফর ইউ’। অসহায় ও দুস্থদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়াই ছিল তার প্রথম লক্ষ্য। সুস্থ থাকতে হাঁটার গুরুত্ব তুলে ধরে তখন থেকেই তিনি শুরু করে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান।
এর অংশ হিসেবে ২০১৪ সালের ১১ কলকাতা থেকে রওনা হয়ে ৪৫০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে পৌঁছান।
প্রতিবছর ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিকভাবে হাঁটা দিবস হিসেবে পালনের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল রুমার সংগঠন 'হেল্প ফর ইউ'। ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলা প্রশাসন ১৯ ফেব্রুয়ারিকে ‘হাঁটা দিবস’ হিসেবে পালন করে। এরপর জাতীয় স্বীকৃতির জন্য ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে 'হেল্প ফর ইউ'।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতবছর ২৫ জুলাই এক চিঠিতে 'হেল্প ফর ইউ'কে জানায়, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত হাঁটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দৈনিক ৩০ মিনিট হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সে হিসেবে ১৯ ফেব্রুয়ারি হাঁটা দিবস পালন করা যেতে পারে।