তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিবেদন তুলে ধরতে বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এতথ্য জানান।
তিনি বলেন, “কমিটিগুলো ঘটনাস্থল পরিদর্শন সাক্ষ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তা প্রায় একইরকম। আন্তঃনগর ৭৪১ নম্বর তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকো মাস্টার, সহকারী লোকো মাস্টার ও গার্ড সিগন্যালসমূহ যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ না করে ট্রেন পরিচালনা করার কারণে এ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়।”
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে মোট পাঁচটি সুপারিশ করেছে তিন তদন্ত কমিটি। এগুলো হলো-
* লোকো মাস্টার, সহকারী লোকো মাস্টারের কার্যক্রম তদারকি করার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন
* ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া
* ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের শূন্যপদ পূরণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া
* ট্রেনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় ‘ক্লোজড ইউজার গ্রুপের’ মোবাইল ফোন বা আধুনিক অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা
* বাংলাদেশ রেলওয়েতে এটিএস (অটোমেটিক ট্রেন স্টপ) সিস্টেম প্রবর্তন
এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে মন্তব্য করেন রেলমন্ত্রী।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ স্টেশনের আউটার ক্রসিংয়ে ১২ নভেম্বর রাত পৌনে ৩টার দিকে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে সংঘর্ষে ১৭ জনের প্রাণ যায়, আহত হন অর্ধশতাধিক।
আর সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস কসবা রেলওয়ে স্টেশন পার হয়ে মন্দবাগ স্টেশনে প্রবেশ করার পথে ট্রেনটিকে প্রধান লাইন ছেড়ে ১ নম্বর লুপ লাইনে যাওয়ার সংকেত দেওয়া হয়।
রাত ২টা ৫৫ মিনিটে তূর্ণা নিশীথার চালক আউটার ও হোম সিগন্যাল অমান্য করে মন্দবাগ স্টেশনের প্রধান লাইনে প্রবেশের সময় প্রধান লাইন থেকে লুপ লাইনে ঢুকতে থাকা উদয়নের মাঝামাঝি আঘাত করে।
তাতে উদয়নের তিনটি বগি দুমড়েমুচড়ে যায়। তূর্ণা নিশীথার চালক তাহের উদ্দিন সিগন্যাল না মানায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে রেল কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়।
ওই ঘটনায় তূর্ণা নিশীথার চালক তাহের উদ্দিন, সহকারী চালক অনুপ দেব, পরিচালক (গার্ড) আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের একটি ও রেলের মহাপরিচালক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।