মঙ্গলবার কমিশন থেকে দুটি মামলা করতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনু এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপনের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা হচ্ছে। তাদের দুই সহযোগী হারুনুর রশীদ ও আবুল কালাম আজাদকেও মামলা দুটিতে আসামি করা হচ্ছে।
বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাগুলো হবে বলে জানান প্রনব।
এনু ও তার দুই সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ উপায়ে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হচ্ছে।
এর মধ্যে হারুনুর রশীদ ও আবুল কালাম আজাদ প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনে এনুকে সহযোগিতা করেছে বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এনুর ভাই রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহিভূর্ত সম্পদ করেছেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের নেতা দুই ভাই, তাদের এক কর্মচারী এবং তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়, যেগুলো জুয়ার টাকায় তৈরি সম্পদ বলে র্যাব জানিয়েছে।
এনু ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন শেয়ারহোল্ডার বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়।
এনু ও রুপন তারপর থেকে পলাতক।
শামীম-খালেদকে গ্রেপ্তারের আবেদন
ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিশেষ ভারপ্রাপ্ত বিচারক আল মামুনের আদালতে এ আবেদন করেন আলাদা মামলার দুই তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৭ অক্টোবর আসামিদের উপস্থিতিতে এ বিষয় শুনানির জন্য দিন রেখেছেন বিচারক।
এর আগে সোমবার খালেদ ও জি কে শ্মীমের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ আলাদা মামলা করেছে দুদক।
জি কে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন।
অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৯৭ কোটি আট লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগে শামীমের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়।
অন্যদিকে খালেদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন দুদকের আরেক উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। এই মামলায় খালেদের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৯ টাকা টাকা অবৈধ সম্পদ থাকার অভিযোগ আনা হয়।
গত ১৮ সেপেটম্বর ঢাকার ক্লাবপাড়ায় অভিযান শুরুর প্রথমদিনেই গুলশানের বাসা থেকে খালেদকে ধরা হয়। তার বাসা থেকে পাওয়া যায় ৫৮৫টি ইয়াবা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা এবং অবৈধ অস্ত্র।
ওই ঘটনায় অস্ত্র, মাদক ও মুদ্রাপাচার আইনে খালেদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয় গুলশান থানায়। আর মতিঝিল থানায় মাদক আইনে করা হয় আরেকটি মামলা।
অন্যদিকে যুবলীগ নেতা পরিচয়ে ঠিকাদারী ব্যবসা চালিয়ে আসা জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে।
সেখান থেকে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুইশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানায় র্যাব। তখন শামীমের সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
শামীমের বিরুদ্ধেও মাদক, মুদ্রা পাচার ও অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা হয়েছে।