রোববার টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ওই উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ করা হয়। অবিলম্বে তাকে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
উপাচার্য নাসিরের বিরুদ্ধে এই কর্মসূচির সূচনা করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাবেক শিক্ষার্থী। ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ৩০ জন সাবেক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে অংশ নিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
‘ভিসির পেটোয়াবাহিনীর অবিলম্বে গ্রেপ্তার চাই’, ‘সন্ত্রাসী হামলায় প্রশাসন চুপ কেন’, ‘আমার ভাই বোনের রক্ত ঝরালে কেন, জবাব চাই জবাব চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়ান তারা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন বলেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর যে বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে তার বিচারের দাবিতে এখানে দাঁড়িয়েছেন। ভিসি নাসিরউদ্দিন শিক্ষার্থীদের ‘অধিকার খর্ব করেছেন’ বলে তার পদত্যাগ দাবি করছেন তারা।
তাদের মানববন্ধন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমবেত হয়ে ভিসি নাসিরউদ্দিনের কুশপুতুল দাহ করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সদস্যরা।
ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে উপাচার্য নাসিরের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর শনিবার সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। উপাচার্য বহিরাগতদের দিয়ে এই হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
উপাচার্য নাসিরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের এই ক্ষোভের সূত্রপাত একটি ফেইসবুক পোস্ট নিয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে।
এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ১৪টি বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়, যার মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাক্স্বাধীনতার নিশ্চয়তা, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার না করা, অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান না করা এবং ফেইসবুক পোস্ট ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না বলে বলা হয়।
তবে এতে সন্তুষ্ট না হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশনসহ আন্দোলন অব্যাহত রাখেন, যার প্রেক্ষিতে শনিবারের ওই হামলা হয়।
এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে অবিলম্বে ভিসি নাসির উদ্দিনকে অপসারণের দাবি জানান।
উপাচার্য নাসির উদ্দিনের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সাতাশিয়া গ্রামে।
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া সেখানেই বায়ো টেকনোলজির শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি।
নাসির উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময় ছাত্রদল করতেন এবং পরে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল সোনালী দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।