নির্যাতসেনর মুখে মিয়ানমারের রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের মধ্যে একটি দলকে ফেরত পাঠানোর মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার প্রত্যাবাসন শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও তা ভেস্তে গেছে।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের তাদের নাগরিকত্বের অধিকার এবং নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাস নিশ্চিতসহ কয়েকটি শর্ত পূরণ হওয়ার আগে রাখাইনে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।
প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকা ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে বলেছে, নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা জরুরি।
“রোহিঙ্গাদের আস্থা অর্জনে লেগে থাকতে হবে। এটি কেবল একটি কর্মসূচি নয়, একটা সামগ্রিক একটা পদ্ধতি।”
এর আগে গত বছর ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসন শুরুর সব প্রস্তুতি নিয়ে দিনভর অপেক্ষা করার পরও মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মনে আস্থা তৈরি না হওয়ায় সেই চেষ্টাও অসফল হয়।
রোহিঙ্গাদের জোর করে ফেরত পাঠাতে না চাইলেও তাদের আস্থা ফেরানোর ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব মিয়ানমারের বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
১১ লাখের মধ্যে প্রত্যাবাসন চুক্তির অংশ হিসেবে যাচাই বাছাইয়ের জন্য মিয়ানমারের হাতে ২৫ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিল বাংলাদেশ। তার মধ্য থেকে ৩ হাজার ৩৪০ জনের বিষয়ে মিয়ানমারের ছাড়পত্র আসে। বৃহস্পতিবার ছিল ওই সংখ্যক রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দিন।
মিয়ানমার বলছে, রাখাইন রাজ্যে পরিস্থিতি সবার জন্য স্বাভাবিক করার পাশাপাশি তাদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ বাড়াতে জাতিসংঘের সঙ্গে মিলে তারা কাজ করছে।
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারের এই উদ্যোগকে ইতিবাচক বলছে ইউএনএইচসিআর।
অন্যদিকে শরণার্থীদের সিদ্ধান্তকে মর্যাদা দিয়ে আসায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ সংস্থাটি।
কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের প্রত্যাবাসনে ৪টি শর্ত জুড়ে বলছেন, মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আগে তাদের নাগরিকত্ব, জমিজমা ও ভিটেমাটির দখল, নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে ইউএনএইচসিআর বলছে, “তাদের অনেকেই জানিয়েছে, তারা যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারে ফিরতে চায় যদি নাগরিকত্ব, মুক্ত চলাচল আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।”