৩ শর্তে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সায় ইউনেস্কোর: তৌফিক ইলাহী

ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি তিনটি শর্ত দিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সরকারি উদ্যোগে সায় দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2019, 06:47 PM
Updated : 10 July 2019, 06:47 PM

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪৩তম সভার ফলাফল জানাতে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও গত বৃহস্পতিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় ইউনেস্কোর ‘বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের’ তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের আপাতত অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত হয়।

কমিটিতে ২১ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৬টি দেশ বাংলাদেশের অবস্থানের পক্ষে ভোট দেয় বলে জানান তৌফিক ইলাহী।

তিনি বলেন, “রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নির্মাণে এখন আর কোনো বাধা নেই। বরং হেরিটেজ কমিটির চূড়ান্ত খসড়ায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় বাংলাদেশের সাতটি কাজের প্রশংসা করা হয়েছে।

“হেরিটেজ কমিটির ২১টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে চীন, আজারবাইজানসহ ১৬টি দেশ বাংলাদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠদেশ আমাদের সমর্থন জানিয়েছে এবং বলেছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা বা প্রয়োজন নেই।”

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসার্ভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) থেকে সুন্দরবন ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল, তা তথ্যভিত্তিক ছিল না বলে বাংলাদেশের সরকারি বিশেষজ্ঞ দল হেরিটেজ কমিটির সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বোঝাতে পেরেছে বলে তিনি জানান।

তৌফিক ইলাহী বলেন, “আইইউসিএন অনেকটা তাড়াহুড়া করে একটা দেশের ব্যাপারে মন্তব্য করে দিয়েছে। আগে তারা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে কথা বললেও এখন দূরে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়েও আপত্তি তুলেছিল। আমরা বলে দিয়েছি, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের সীমানা থেকে অনেক অনেক দূরে।”

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্রে নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তিনটি নির্দেশনা মেনে চলার কথা হেরিটেজ কমিটির বৈঠক থেকে বলা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা।

“তাদেরকে তিনটি কাজ করতে সম্মত হই। ১. ন্যাশনাল অয়েল স্ফিল অ্যান্ড কেমিক্যাল কন্টিজেন্সি প্লান তৈরি করা। ২. ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার ও আইইউসিএন প্রতিনিধিদের একটি দলকে সুন্দরবন পরিদর্শনে আমন্ত্রণ জানানো এবং ৩. স্ট্র্যাটেজিক এনভাইরনমেন্ট অ্যাসেসমেন্ট করা।”

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই হেরিটেজ কমিটির প্রতিনিধিদের বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান জ্বালানি উপদেষ্টা।

বিদ্যুৎ সচিব আহমেদ কায়কাউস বলেন, সুন্দরবন এলাকার পরিবেশের কৌশলগত সমীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের একটি ‘শর্ট লিস্ট’ তৈরি করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে।

সুন্দরবন রক্ষায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপের জন্য এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অতিরিক্ত ১৩ কোটি ডলার ব্যয় হচ্ছে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।