সব কিছুতে প্রধানমন্ত্রীকে লাগলে সচিবদের দরকার কী: হাই কোর্ট

আড়ংয়ের আউটলেটে অভিযান চালানোর পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে বদলির ঘটনায় সচিবদের সততা ও কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাই কোর্ট বলেছে, প্রধানমন্ত্রীকে সব কিছুতে হস্তক্ষেপ করতে হলে তাদের কাজ কী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2019, 11:07 AM
Updated : 18 June 2019, 11:07 AM

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধে জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানির সময় মঙ্গলবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এ মন্তব্য করে।

আবেদন নিয়ে শুনানির এক পর্যায়ে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন আদালতের উদ্দেশে বলেন, “আড়ংয়ে সাতশ টাকার পাঞ্জাবি কত টাকা রেখেছে দেখেছেন? এটা যে বন্ধ করতে গেছে তাকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে।”

তখন আদালত বলে, “সব কিছুতে প্রধানমন্ত্রীর কেন ডাইরেকশন দিতে হবে? সেক্রেটারিরা কি তাদের পকেটে ঢুকে গেছে? বন্ধের সময় বদলির আদেশ দিয়েছে। লজ্জাও নাই। কি বলবো প্রধানমন্ত্রী সব কিছুতে ইন্টারফেয়ার করলে এদের থাকার দরকার কী। কত নোংরামি!

“এ রকম করলেতো যারা সৎ অফিসার তারা ডিমোরালাইজড হয়ে যাবে; নিরুৎসাহিত হয়ে যাবে। যারা বন্ধের দিনে এ কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল।”

৩ জুন ঢাকার উত্তরার আড়ংয়ে অভিযান চালিয়ে পণ্যের দাম বেশি রাখার দায়ে জরিমানার ধরার পাশাপাশি আউটলেটটিকে একদিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে পণ্যের দাম বেশি লেখার ভুল স্বীকার করার পর দোকানটি ‍খুলে দেওয়া হয়।

ওই দিনই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনজুরকে খুলনায় বদলির আদেশ দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আদেশ হওয়ার পর ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাতভর সমালোচনা হয়। সেসময় ফিনল্যান্ড সফররত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরদিন সকালে তার বদলির আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

তবে জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহম্মদ দাবি করেছেন, মনজুর শাহরিয়ারকে বদলির আদেশের পেছনে আড়ংয়ে অভিযানের কোনো সম্পর্ক নেই। তার বদলির সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে।

পরে মনজুর শাহরিয়ারের বদলির আদেশের সমালোচনা করে এবং অভিযানের গুরুত্ব তুলে জাতীয় সংসদে কথা বলেন শেখ হাসিনা।

১২ জুন সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই রোজার সময়, তখনও আমি দেশের বাইরে ছিলাম। বেশ কিছু বড় বড় জায়গায় একজন অফিসার হাত দিল বলে তার বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা হঠাৎ করে নেওয়া হল- এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।

“বরং আমি আজকেও বলে দিয়েছি যে, তাকে আবার ওই দায়িত্বেই দিতে হবে। খুব নামি-দামি জায়গা, তাদের যে কোনো খারাপ কিছু হবে না বা থাকবে না যারা ওটার মালিক তারাওতো এই গ্যারান্টি দিতে পারবে না।”

শেখ হাসিনা বলেন, “সেখানে কেন পরীক্ষা করতে পারবে না, কেন সচেতন করতে পারবে না? এই অধিকারটা কেন থাকবে না?

“সাধারণ ছোটখাট সেগুলো ধরতে পারবে। আর বড় অর্থশালী, সম্পদশালী হলেই তাদের হাত দেওয়া যাবে না। তাদের অপরাধ অপরাধ না এটাতো হয় না।”