ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধের আশ্বাস

ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ও মাদক চোরাচালানের বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ে তিন দিনের সম্মেলন শেষ হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 June 2019, 02:38 PM
Updated : 15 June 2019, 02:40 PM

শনিবার রাজধানী ঢাকায় বিজিবি সদর দপ্তর পিলখানায় বিএসএফপ্রধান রজনীকান্ত মিশ্রা ও বিজিবিপ্রধান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের সামনে উদ্বেগ ও আশ্বাসের কথা তুলে ধরেন।

সীমান্ত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, “কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, যেটা কখনই বিএসএফ সদস্যরা চান না। তারা অনেক ধৈর্য ধরে। জীবনহানি কারো কাম্য নয়।

“অনেক বিএসএফ সদস্য অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের হামলার শিকার হয়েছেন, অনেকের মৃত্যু হয়েছে, তার পরেও তারা ধৈর্য ধরেছেন। তারপরও প্রতিটি ঘটনায় আইনানুযায়ী তদন্ত হয়।”

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সম্প্রতি কিছু ঘটনা বেড়েছে। তবে এর কারণ উদ্ঘাটনে উভয়পক্ষ কাজ করছে। আমরা চাই হত্যাকাণ্ড যেন না ঘটে।” 

গবাদি পশু চোরাচালান, কাঁটাতারা বেড়া কেটে ফেলা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএসএফ মহাপরিচালক।

বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক চমৎকার। হত্যাকাণ্ড কারোই কাম্য নয়।”

তবে শুধু হত্যাকাণ্ড নয় মাদক চোরাচালান শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিএসএফ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে আশাপ্রকাশ করে তিনি বলেন, অস্ত্র চোরাচালান সোনা চোরাচালান নকল টাকা নিয়ে এই সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। হত্যাকান্ড শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতেও উভয়পক্ষ একমত হয়েছে।”

অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, “একে অপরে সীমান্ত অতিক্রম না করা, মানবপাচার রোধে আমরা একমত হয়েছি।”

ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অবস্থানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করে রজনীকান্ত মিশ্রা বলেন, “বিজিবি তথা বাংলাদেশ এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অবস্থান ধ্বংস করতে চলমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।”

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত মিয়ানমার নাগরিকরা ভারত হয়ে যেন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে উভয়পক্ষ একমত হয়েছে বলে সাংবাদিকেদের জানানো হয়।

একইসঙ্গে যৌথ নদী কমিশনের অনুমোদন অনুযায়ী সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণে সহায়তা দেওয়া ও অননুমোদিতভাবে সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ না করার ক্ষেত্রে মহাপরিচালকদ্বয় সম্মত হন।  

গত বছর যশোর সীমান্তের পর এবার কুমিল্লা এলাকায় ‘দ্বিতীয় ক্রাইম ফ্রী জোন’ ঘোষণা  করা হয় এই সম্মেলনে।

বিজিবি মহাপরিচালক জানান, দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার অংশ হিসেবে বিএসএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিল্লীতে শুরু হওয়া মটরসাইকেল র‌্যালি ডিসেম্বরে বিজিবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাংলাদেশে এসে শেষ হবে।

সম্মেলন চলাকালে বিজিবির সীমান্ত পরিবার কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বিএসএফ ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বদানকরী গীতা মিশ্রাকে অভিনন্দন জানান হয়।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিসহ ১০ সদস্যদের এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১৯ সদসস্যের প্রতিনিধি দল এই সম্মেলনে অংশ নেন।