বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে দুদকের চতুর্থ মামলা

বন্ধকী সম্পত্তির মূল্য বেশি দেখানোসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) থেকে ঋণ দেওয়ার অভিযোগে ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2019, 02:53 PM
Updated : 29 April 2019, 02:53 PM

সোমবার রাজধানীর গুলশান থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক এই মামলা করেন বলে কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

এর আগে বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত বছর আরও তিনটি মামলা করে দুদক। এর মধ্যে আদালতে একটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি।

নতুন মামলায় বাবুল চিশতী ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মেসার্স রোজবার্গ অটো রাইস মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হযরত আলী (৫০), পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৩), ব্যাংকটির শেরপুর শাখার সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার ও শাখা প্রধান উত্তম বড়ুয়া (৩৫), প্রধান শাখার সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম এম শামীম (৬৫), সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল আহসান চৌধুরী (৫৭) এবং সিটি সার্ভে লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. খায়রুল আলম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণের নামে ব্যাংকিং নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এবং বন্ধকী সম্পত্তির অতি মূল্যায়ন দেখিয়ে ৫৮ কোটি টাকা ঋণ নেন। পরে যা সুদাসল মিলিয়ে ৬৯ কোটি ৫৮ লাখ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

এসব অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর হয়েছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৬/৪০৯/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০১৪ সালেল ২৬ জুন থেকে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে।

এজাহারে বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংকের শেরপুর শাখা থেকে মেসার্স রোজবার্গ অটো রাইস মিলস লিমিটেডের নামে ৫৮ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। ব্যাংকটির তৎকালীন অডিট কমিটির চেয়ারম্যান বাবুল চিশতী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের প্রভাব খাটিয়ে ঋণ মঞ্জুরের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এছাড়া অন্যান্য আসামিদের এই ঋণ অনিয়মে যোগসাজশ রয়েছে।

গত বছরের ১০ এপ্রিল মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারার বাবুল চিশতীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় একটি মামলা করে দুদক। আদালতে এ মামলাটির অভিযোগপত্র দিয়েছে কমিশন।

এছাড়া গুলশান থানায় গত বছরের ৮ অগাস্ট দায়ের করা আরেকটি মামলায় বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে ফারমার্স ব্যাংকের অর্থে প্রভাব খাটিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

এরপর একই বছরের ২৮ অক্টোবর একই থানায় করা মামলায় একটি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ২৯ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া ও সেই অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয় বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে। এ মামলায় তার সাথে আরও পাঁচজনকে আসামি করে দুদক।