প্রতিদিনের মতো একসঙ্গেই পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ার বাসায় ফিরলেন তারা, তবে এবার আর এক ঘরে ঠাঁই হল না; বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো মাকসুদুর রহমান ও তার স্ত্রী রুমকি আক্তারের দাফন হল ঢাকা ও নীলফামারির জলঢাকায়।
Published : 29 Mar 2019, 07:52 PM
বৃহস্পতিবার বহুতল ওই ভবনে আগুন লাগার পর লাফিয়ে পড়ে নিহত হন মাকসুদ (৩২), আর দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন রুমকি (৩০)।
তারা দুজনই চাকরি করতেন হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে, এফআর টাওয়ারের দশম তলায় ছিল তাদের অফিস।
২০১৬ সালে বিয়ের পর একসঙ্গে জীবন শুরু করা মাকসুদ-রুমকির অফিস এক হওয়ায় তাদের যাওয়া-আসাও ছিল একসঙ্গেই।
প্রতিদিন সকাল ৯টায় পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার আলমগঞ্জের বাসা থেকে স্ত্রীকে মটরসাইকেলে নিয়ে বের হতেন মাকসুদ। অফিস শেষে ওই মটরসাইকেলেই রাত ৯টায় বাসায় ফিরতেন তারা।
মাকসুদের কলেজপড়ুয়া ছোট বোন নেহা ও মা জেসমিনকে নিয়ে ছিল তাদের সংসার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই অগ্নিকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃত অবস্থায় ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয় মাকসুদকে। আর সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এক নারীর পোড়া লাশ। কয়েক ঘণ্টা পর ইমতিয়াজ আহমেদ নামে মাকসুদের এক খালাত ভাই গিয়ে শনাক্ত করেন ভাবীকে।
পরে ওই রাতেই দুজনের লাশ নেওয়া হয় আলমগঞ্জে মাকসুদের বাসায়। সকালে সেখানে জানাজার পর রুমকির লাশ নেওয়া হয় বাবার বাড়ি নীলফামারির জলঢাকায়। দুপুরে জুমার নামাজের পর দুজনকেই দাফন করা হয়।
মাকসুদের বাবার বাড়িও গেন্ডারিয়ার কাঠপট্টি এলাকায়। কিন্তু তার বাবা মারা যাওয়ার পর আলমগঞ্জে মামাদের বাসায় বড় হন মাকসুদ ও নেহা। তিন মামা আর পাঁচ খালা তাদের দেখাশুনা করতেন।
“যেই ছেলেটা নিজেকে গুছিয়ে সামনে এগোচ্ছিল তখনই চলে গেল,” বলেন তিনি।
মাকসুদকে দাফন করা হয়েছে পুরান ঢাকার ফরিদাবাদে পারিবারিক কবরস্থানে। জানাজার জন্য তার মরদেহবাহী গাড়ি যখন বাড়ি থেকে নেওয়া হয়, তখন দোতলায় নিজেদের বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে অপলক তাকিয়ে ছিলেন বোন নেহা।
রুমকিকেও জুমার নামাজের পর জলঢাকায় দাফন করা হয় বলে ইফতিয়ার নামে তার এক স্বজন জানান।