রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সংসদে আলোচনা ও সর্বদলীয় কমিটির দাবি

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে করণীয় ও অগ্রগতি বিষয়ে দেশের জনগণ ও বিশ্ববাসীকে জানাতে একাদশ সংসদে আলোচনা করে প্রস্তাব নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2019, 07:13 PM
Updated : 6 Feb 2019, 07:13 PM

সেই সঙ্গে সংসদীয় দল বা কমিটি গঠন করে জাতিসংঘ, ভারত, চীন, মিয়ানমার গিয়ে সরেজমিন পরিস্থিতি দেখে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার প্রস্তাবও করা হয়েছে।

বুধবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সংসদে ‘রোহিঙ্গা সমস্যা’ নিয়ে আলোচনার জন্যে একটি বিশেষ দিন নির্ধারণের প্রস্তাব দেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।

সরকারি দলের এ সাংসদের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।

সাবেক মন্ত্রী নাসিম বলেন, “২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১১-১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। কিন্তু সমস্যার কোনো্ সমাধান হয়নি। দীর্ঘ সময়ে মাত্র তিনজন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত গেছে। তাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে অনীহা রয়েছে।

“এভাবে চলতে পারে না। রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের সমস্যা নয়; বৈশ্বিক সমস্যা। বিদ্যমান এ সমস্যা সমাধানে সংসদে সব দল মিলে আলোচনার জন্যে একটি দিন নির্ধারণ করা যেতে পারে। সংসদে আলোচনা করে একটি প্রস্তাব নেওয়া যেতে পারে।”

ক্ষমতাসীন দলের এ জ্যেষ্ঠ নেতা সংসদীয় কমিটি করার দাবি জানিয়ে বলেন, ভারত, চীন ও মিয়নমারে গিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করতে একটি সংসদীয় কমিটি থাকা দরকার।

এরপরই সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, রোহিঙ্গা সংকটকে বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ কীভাবে দেখছে তা দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর জানা দরকার। একটি দল জাতিসংঘ সফর করে সংসদে প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে পারে।

সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর প্রতিনিধি নিয়ে সর্বদলীয় কমিটি করার প্রস্তাব দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা তুলে ধরে ইনু বলেন, “বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও জাতিসংঘ- এই ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হবে না। শুধু দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগে এ সমস্যার সমাধান হবে না। এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা।”

সাবেক আরেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, “রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল, সেটা কতটুকু যথাযথ ছিল, তা খতিয়ে দেখা দরকার। এই চুক্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে ‘স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন করলেই ফেরত যাবে’ এটি যুক্ত করা হয়েছে। তা বাংলাদেশের পক্ষে ছিল বলে মনে করি না।”

মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে তিনিও প্রশ্ন তোলেন। সেই সঙেগ বলেন, “আন্তর্জাতিক বন্ধুরা পরামর্শ দিয়ে মনে করেছিলেন, এই সমস্যার সমাধান করবেন। আমি মনে করি, তারা তাদের রাজনীতি করেছেন, আমাদের রাজনীতি করেননি।”

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল করেলেও এখন এই সমস্যার ইতি টানা দরকার বলে মন্তব্য করেন মেনন।

সঙ্কট অবসানে অনানুষ্ঠানিক কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর পরামর্শ দেন তিনি।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সর্বদলীয় কমিটি করার প্রস্তাব দেন তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।