আদমশুমারিতে হিজড়াদের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান

হিজড়াদের দেশের উন্নয়নের মূল স্রোতে আনতে আদমশুমারিতে হিজড়াদের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2018, 07:19 PM
Updated : 13 Dec 2018, 07:24 PM

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ২০২১ সালের আদমশুমারির আগেই হিজড়াদের শুমারির জন্য একটি বিশেষ শুমারি করা যায় কি না, তা বিবেচনা করার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

কাজী রিয়াজুল হক বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে প্রথমবারের মতো তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দিয়েছেন। এবার তাদের শুমারি করে ‘দেশের প্রত্যেক মানুষ সমান অধিকার পাবে’ সংবিধানের এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে।”

তবে শুমারি করতে গেলে হিজড়াদের সংজ্ঞায়িত করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কে বা কাদের হিজড়া হিসেবে তালিকাভুক্ত করা যায়, সে বিষয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করা যেতে পারে।”

হিজড়াদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, “হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনেক মেধাবীরা আছেন তাদেরসহ আরও যারা আছেন তাদের আমরা সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি। অথচ এখন তাদের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের কাজে নেওয়া হয় না।

“তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারলে আমরা আমাদের চলমান টেকসই উন্নয়নের মূলমন্ত্র ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না’ এই লক্ষ্যটি পূরণ করতে পারবো।”

ফাইল ছবি

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক ড. কৃষ্ণা গায়েন বলেন, “নীতি প্রণয়নের জন্য সরকারের কাছে সকল ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত পরিসংখ্যান ব্যুরো সরবরাহ করে থাকে। সরকার চাইলে হিজড়াদের সকল ধরনের তথ্য একটি শুমারির মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব।”

তবে শুমারিতে তারা কী কী তথ্য চান তা পরিসংখ্যান ব্যুরোতে এসে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপের প্রস্তাব করেন তিনি।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।

তিনি বলেন, “শুমারির মাধ্যমে হিজড়া জনগোষ্ঠীর নির্দিষ্ট সংখ্যা জানা গেলে এই জনগোষ্ঠীর বিশেষ চাহিদা নিরুপণ ও সে মোতাবেক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা সম্ভব।”

বাংলাদেশের কোন জেলায় কত হিজড়া জনগোষ্ঠী আছে সে অনুযায়ী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক রুবায়েত।  

এতে করে হিজড়াদের মৌলিক মানবিক অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে উল্লেখ তিনি বলেন, “এছাড়াও জাতীয় বাজেটে হিজড়াদের জন্য যথাযথ বরাদ্দের দাবি তোলা যাবে এবং বরাদ্দের সদ্ব্যবহার সহজ হবে।”

হিজড়াদের শুমারি করা হলে বছরওয়ারি কতজন হিজড়াকে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে কতজন হিজড়াকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলো তা নির্ণয় করা সম্ভব হবে বলে জানান রুবায়েত।