ভর্তি পরীক্ষার্থীকে ‘যৌন হয়রানি’, জবি ছাত্রলীগের ২ কর্মী আটক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা এক শিক্ষার্থীকে ‘যৌন হয়রানি’ করার অভিযোগে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2018, 02:10 PM
Updated : 7 Oct 2018, 03:46 PM

শনিবার ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মানবিক শাখার (ইউনিট-২) ভর্তি পরীক্ষার পর ‘যৌন হয়রানির’ শিকার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই নারী শিক্ষার্থী।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র জয়নুল আবেদীন ও একই বিভাগের মোবারক ঠাকুর প্রিন্সকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ছাত্রের বিরুদ্ধে একজন নারী ভর্তিচ্ছুর সঙ্গে অশালীন আচরণের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।

“এই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের কোতয়ালী থানায় সোপর্দ করেছি। আগামী কর্মদিবসে সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা করে তাদের ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

অভিযুক্তদের নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি আটকে দেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা

হয়রানির শিকার ওই শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগে বলেছেন, পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞান অনুষদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা ডাক দেন। পরিচয় দেওয়ার পর তারা তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গা লক্ষ্য করে অশালীন ইশারা এবং নানা ধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।

“শুধু অশালীন মন্তব্য করেই থেমে যায়নি তারা, বরং আমি ওড়না কেন পরি না তাও জানতে চায় তারা এবং মানিব্যাগ থেকে আমাকে ওড়না কেনার টাকা দিতে চায়। এসময় তারা আমার সাথে সর্বোচ্চরকম অশালীন কথাবার্তা বলে,” লিখিত অভিযোগে বলেছেন ওই শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে ওই শিক্ষার্থীর বড়বোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর উটকমকে বলেন, “এমন আচরণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চরম হতাশাজনক। আজও নারী স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার রাখে না, এটা মেনে নেওয়া কষ্টসাধ্য। আমি চাই আমার বোনের মত কারো সাথে যেন এমন আচরণ আর না হয়।”

এদিকে অভিযুক্তদের নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের কর্মীদের বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ছাত্রলীগ কর্মীদের শান্ত করেন।

এ বিষয়ে প্রক্টর নূর মোহাম্মদ বলেন, “আমি তাদের কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বলব না, যারা পুলিশের গাড়ি অবরোধ করার চেষ্টা করেছিল তারা অভিযুক্তদেরই বন্ধুবান্ধব ছিল। তারা চেয়েছিল যেন ঘটনাটি ক্যাম্পাসেই মীমাংসা করা হয়।”

ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়  ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “যারা অন্যায় করবে তাদেরকেই শাস্তি পেতে হবে, সে যেই হোক না কেন।”