সিলেটে স্থগিত দুই কেন্দ্রের ভোট ১১ অগাস্ট

যে দুই কেন্দ্রের জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল প্রকাশ আটকে রয়েছে, সেই দুই কেন্দ্রে ভোট হবে ১১ অগাস্ট।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2018, 10:23 AM
Updated : 1 August 2018, 10:23 AM

নির্বাচন কমিশনের উপ সচিব ফরহাদ হোসেন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে তারিখ নির্ধারণ করে সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা পাঠিয়ে দিয়েছি।”

সোমবার রাজশাহী ও বরিশালের সঙ্গে একসঙ্গেই সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। কিন্তু অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে দুটি কেন্দ্র স্থগিত হওয়ায় এবং ওই দুই কেন্দ্রের ভোটের সংখ্যা প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ব্যবধানের চেয়ে বেশি হওয়ায় ফলাফল আটকে যায়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান সোমবার রাতে ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টির যে ফলাফল ঘোষণা করেন, তাতে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ৪ হাজার ৬২৬ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের বদর উদ্দীন আহমদ কামরানের চেয়ে এগিয়ে আছেন।

সিলেটের গত মেয়াদের মেয়র আরিফুল ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৩ ভোট। আর সাবেক মেয়র কামরান নৌকা প্রতীকে ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট পেয়েছেন ।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, স্থগিত থাকা গাজী বোরহান উদ্দিন  মাদ্রাসা (১১৬ নং কেন্দ্র) ও হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৩৪ নং কেন্দ্র) কেন্দ্রে মোট ভোট আছে ৪৭৮৭টি। অর্থাৎ দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধানের চেয়ে ১৬১টি ভোট বেশি রয়েছে স্থগিত কেন্দ্র দুটিতে। 

ফলে নিয়ম অনুযায়ী ওই দুই কেন্দ্রের ভোটারদের আবার ভোট দিতে হবে এবং তাতেই নির্ধারিত হবে পরবর্তী মেয়র কে হবেন।

অবশ্য গত বার আরিফুলের কাছে হেরে যাওয়া কামরান এবার ব্যবধান ডিঙিয়ে জয়ী হতে পারলে তা হবে অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো ঘটনা।

সার্বিক ভোটের হার (৬২ শতাংশ) যদি স্থগিত দুটি কেন্দ্রে পুনঃভোটের সময় বজায় থাকে, তাহলে ৩ হাজারের মতো ভোট পড়তে পারে। এই সব ভোট যদি নৌকা প্রতীকে পড়ে, আরিফুল যদি একটি ভোটও না পান, তাতেও তার হারার কোনো সম্ভাবনা নেই।

কামরানকে জিততে হলে ৪৮৮৭ জন ভোটারের মধ্যে কমপক্ষে ৪৭২৬ জনকে ভোট কেন্দ্রে নিতে হবে এবং তাদের সবার ভোট নৌকায় পড়তে হবে। এই ভোটের একটি বাতিল হলেও চলবে না।

৪৭২৬টি ভোটের চেয়ে একটি কম পড়লে কিংবা কোনো ভোট আরিফুলের ধানের শীষে পড়লেই কামরানের সম্ভাবনা উবে যাবে।

আর ওই দুই কেন্দ্রের সব ভোটার যদি ভোট দেন, তাতে আরিফুলকে জয়ী হতে হলে মাত্র ১৬২টি ভোট পেলেই চলবে।

সোমবার ফল ঘোষণা না হলেও মধ্যরাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আরিফুল বের হওয়ার সময় তার সমর্থকরা জয়োল্লাসই করছিল।

আরিফুল সে সময়  সাংবাদিকদের বলেন, “তারা সারাদিন চেষ্টা করেছে লোকজন যেন ভোটকেন্দ্রে না আসে। কিন্তু মানুষকে দূরে রাখা যায়নি। তারা এসেছেন এবং ভোট দিয়েছেন। এ বিজয় জনগণের বিজয়।”

অন্যদিকে কামরান পরদিন তার বাড়িতে সাংবাদিকদের সামনে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে গোলযোগ হওয়া ১৮টি কেন্দ্রে নতুন করে ভোট গ্রহণের দাবি জানান।

অবশ্য ভোটে এগিয়ে থাকা আরিফুল মঙ্গলবার সপরিবারে কামরানের বাসায় গিয়ে কুশল বিনিময় করেন। বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সামনে কোলাকুলিও করেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। তখন দুজনকে বেশ হাসিখুশিই দেখাচ্ছিল।

আরিফুল বলেন, “ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও কামরান আমার বড় ভাই। তার সঙ্গে দেখা করতে বাসায় গিয়েছিলাম। কামরান দীর্ঘদিন নগরপিতা ছিলেন। সব ভেদাভেদ ভুলে একটি পরিকল্পিত সিলেট গড়তে একসাথে কাজ করতে চাই।”

বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান বলেন, “সিলেটে রাজনৈতিক একটা সম্প্রীতি রয়েছে। আরিফুল আমার বাসায় এসেছিলেন। তার সঙ্গে কথা হয়েছে, কুশল বিনিময় হয়েছে।”