লঞ্চে অস্ত্র হাতে মুরাদের সঙ্গী; পুলিশকে ‘মারধর’

বরিশাল থেকে ঢাকা ফেরার পথে একটি লঞ্চে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা শাহে আলম মুরাদের ‘অস্ত্রধারী’ সঙ্গীদের সঙ্গে বচসা হয়েছে পুলিশের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2018, 07:03 PM
Updated : 16 July 2018, 07:25 PM

বরিশাল মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মাহফুজুর রহমান দাবি করেছেন, ঢাকা থেকে আসা যুবকদের একজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখে পুলিশ সদস্যরা লাইসেন্স দেখতে চাইলে তাদের ‘মারধর’ করা হয়।

ওই যুবকদের পরিচয় জানতে চাইলে তাদের ‘বহিরাগত দুর্বৃত্ত’ আখ্যায়িত করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে লঞ্চটিতে দলের নেতা-কর্মীরা ছিলেন স্বীকার করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ বলেছেন, ঘটনাটি ছিল ‘ভুল বোঝাবুঝি’।

এই ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা ছিল না বলে দাবি করেছেন মুরাদ। একই কথা বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজও।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রচারে সদলবলে গিয়েছিলেন ঢাকার নেতা মুরাদ।

প্রচার শেষে তিনি শনিবার ঢাকায় ফেরার সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে বরিশাল লঞ্চ ঘাটে ঢাকাগামী একটি লঞ্চে ঘটনাটি ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশালের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মাহফুজ সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাসহ জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের বিদায় জানাতে তিনিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ওই লঞ্চে উঠেছিলেন।

তিনি বলেন, “সেখানে ভিআইপি লাউঞ্জে বেশ কিছু লোক বসে ছিল। তাদের একজনের হাতে শটগান ছিল। সেখানে এত লোক থাকার কথা নয়। তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই তারা পুলিশের সাথে কথাকাটাকাটি এবং হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়।

“যার হাতে শটগান ছিল, তার কাছে লাইসেন্স দেখতে চাইলে আরও ক্ষিপ্ত হয়। তারা পুলিশকে হিটও করে।”

বরিশাল লঞ্চ টার্মিনাল

ওই যুবকদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তারা ঢাকা থেকে এসেছিল।”

মুরাদের সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না- প্রশ্নে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজ বলেন, “তিনি কেবিনে ছিলেন। তার সাথে এই ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটা রাজনৈতিক কোনো ঘটনাও নয়।”

ঘটনাটি নিয়ে জানতে চাইলে মুরাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লঞ্চে করে আসার সময় সিভিল ড্রেসে আসা এক পুলিশ অফিসারের সাথে দলীয় নেতা-কর্মীদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে আমি শুনে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।”

ঘটনার সময় তিনি কেবিনে ছিলেন বলে জানান মুরাদ।

“তারা আওয়ামী লীগের কি না, সেটা তদন্তে বের হয়ে আসবে “ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নে বলেন পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজ।

তিনি জানান, এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে বরিশাল কোতোয়ালি থানায়।

কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও ঘটনার সময়কার ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষিদের শনাক্ত করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজ।

“ভিডিও ফুটেজ আছে। তা দেখে শনাক্ত করা হচ্ছে। এমরান সৈকত নামে একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।”