সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে: ইসি সচিব

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছিনতাই ও জোর করে বাক্সো ভরার মত ঘটনায় নয়টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে, বাকি ৪১৬টি কেন্দ্রে ‘কোনো ধরনের অনিয়ম ছাড়াই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2018, 01:52 PM
Updated : 26 June 2018, 02:45 PM

মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ শেষে কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ঢাকায় নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ দাবি করে বলেন, ইসি কথা রেখেছে।

“কমিশনের নির্দেশনা ছিল- কোথাও বিন্দুমাত্র অনিয়ম পেলে বন্ধ। কমিশন বলেছিল- অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। এজন্যে অনিয়ম বরদাশত করা হয়নি। ইসির সঙ্গে আলাপ করে প্রিজাইডিং অফিসাররা নয়টি কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। বাকি ৪১৬টি কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং উৎসবের মাধ্যমে ভোট শেষ হয়েছে।”

কেন্দ্রগুলো হল- ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের গাজীপুরের ভোগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (৯৮ নম্বর কেন্দ্র), ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে পর্শিচম জয়দেবপুরের মদিনাতুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা-১ (১৬৬ নম্বর কেন্দ্র), ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া হাজী আব্দুল লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি কেন্দ্র (২৪৩ ও ২৪৪ নম্বর কেন্দ্র), ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বিন্দান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (২৭৪ নম্বর কেন্দ্র), ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের জাহান পাবলিক দত্তপাড়া কেন্দ্র (৩৪২ নম্বর কেন্দ্র), ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের খরতৈল মনসুর আলী আদর্শ বিদ্যালয়ের দুটি কেন্দ্রে (৩৭২, ৩৭৩ নম্বর কেন্দ্র), ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী পিয়ারআলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩৮১ নম্বর কেন্দ্র)।

এসব কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২৩ হাজার ৯৫৯ জন বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিএনপি শতাধিক কেন্দ্র থেকে তাদের প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেওয়াসহ ‘জাল ভোটের মহোৎসবের’ যে অভিযোগ তুলে ধরেছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হেলালুদ্দীন বলেন, “কমিশনের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা আমার জানা নেই। আমি এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।”

সোশাল মিডিয়ায় ভোটের অনিয়মের বেশ কিছু ভিডিও ও ছবি চিত্রও এসেছে। এসব বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এসব অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য নয়।”

মোগরখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরুষ কেন্দ্রে মেয়র পদে সিল মারা ব্যালট সরবরাহ করার অভিযোগ এসেছে

নয়টি কেন্দ্রে অনিয়মের ব্যাখ্যা তুলে ধরে সচিব বলেন, স্থানীয় নির্বাচনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের দ্বন্দ্বের কারণে এসব অনিয়ম হয়েছে।

তবে একটি কেন্দ্রে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন দলের প্রতীক নৌকায় সিল মারা ব্যালটের যেসব ছবি সংবাদ মাধ্যমে এসেছে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

মোগরখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কেন্দ্র নম্বর ১১২) পুরুষ কেন্দ্রের কয়েকজন ভোটার অভিযোগ করেছেন, তাদের মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালট সরবরাহ করা হয়েছে। ওই কেন্দ্রের একটি বুথের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রার্থীর এজেন্ট মিলে এ কাজ করেছে অভিযোগ করেন ওই ভোটার।

লাইনে অপেক্ষমাণ ভোটাররা জানান, বেলা ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে ব্যালট সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। ফলে তাদের প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ড. হাসিনুল কবীর কামালী বলেন, “পোলিং অফিসাররা দেয় না বা ব্যালট নাই- এমন কথা ঠিক না। ১০০ করে ব্যালট ইস্যু করা হয়; হয়ত বিলম্বের কারণে অভিযোগ করছে।”

তবে সিল মারা ব্যালটের বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর দেননি।