হাত হারানো রাজীব না ফেরার দেশে

দুই বাসের মধ্যে পড়ে হাত হারানো রাজীব হোসেনকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন চিকিৎসকরা; কিন্তু মস্তিষ্কের আঘাত এই কলেজছাত্রকে নিয়ে গেছে না ফেরার দেশে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2018, 07:49 PM
Updated : 17 April 2018, 04:46 AM

গত ৩ এপ্রিল ঢাকার কারওয়ান বাজারে দুই বাসের রেষারেষিতে মধ্যে পড়ে একটি হাত হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব। ওই ঘটনায় তিনি মাথায়ও আঘাত পান।

শমরিতা হাসপাতাল থেকে পরদিনই রাজীবকে নেওয়া হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে; অবস্থার অবনতি ঘটলে এক সপ্তাহ আগে তাকে নেওয়া হয়েছিল লাইফ সাপোটে।

সোমবার মধ্য রাতে চিকিৎসকরা রাজীবকে মৃত ঘোষণা করেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া।

এই কলেজছাত্রের খালা জাহানারা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত পৌনে ১টায় ডাক্তাররা তার মৃত্যুর কথা জানায়। আমরা কাল সকালে লাশ বাড়ি নিতে চাই।”

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্নাতকে।

পড়ালেখার ফাঁকে একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে নিজের আর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই ভাইয়ের খরচ চালানোর সংগ্রাম করে আসছিলেন এই তরুণ।

গত ৩ এপ্রিল কারওয়ান বাজারে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের রেষারেষিতে বিআরটিসির যাত্রী রাজীবের ডান কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার মাথার সামনে-পেছনের হাড় ভেঙে যাওয়া ছাড়াও মস্তিষ্কের সামনের দিকে আঘাত লাগে।

রাজীব হোসেনকে দেখতে হাসপাতালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম

প্রথমে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখান থেকে পরে তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেলে। তার চিকিৎসার জন্য গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড।

বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান বলে আসছিলেন, রাজীবের হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, কিডনি কাজ করলেও মস্তিষ্ক সাড়া দিচ্ছিল না।

সোমবার সন্ধ্যায়ও তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজীবের অবস্থা আগের মতোই। বড় কোনো ইমপ্রুভমেন্ট নাই। তার হার্ট, লাংস, কিডনি ভাল, তবে ব্রেইনের অবস্থাই বেশি খারাপ।”