সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহমত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, সরকার যত দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে, ততই মঙ্গল।
Published : 11 Apr 2018, 01:06 PM
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের চতুর্থ দিন বুধবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভের মধ্যে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচর্যের এ বক্তব্য আসে।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, কোটা সংস্কারে যত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ‘জোর দাবি’ জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের ‘ন্যায্য দাবিতে’ সংহতি জানিয়েছে।
“আমাদের ছেলেরা রাস্তায়। আমি কোটা সংস্কারের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি। সরকারকে আমি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি, যাতে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রোববার রাতভর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর সোমবার সচিবালয়ে সমঝোতা বৈঠকে ৭ মের মধ্যে কোটা ব্যবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত জানানোর প্রতিশ্রুতি দেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওই প্রতিশ্রুতিতে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিলে সাময়িক বিভক্তি তৈরি হয়। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফরম ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ আবারও একসঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
উপাচার্য বলেন, “আমি এ দাবিকে যৌক্তিক দাবি বলে মনে করি। যত দ্রুত এই দাবি পূরণ করে কোটা সংস্কার করা যাবে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশান্তি ফিরে আসবে।”
তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের দাবি বিবেচনা না করে সিদ্ধান্ত প্রলম্বিত করা হলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বৃদ্ধি পাবে।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসন আন্দোলনের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে বলে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, যা সঠিক নয়।
“কোটা সংস্কার এমনই একটি যৌক্তিক দাবি, যার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পূর্ণ সহমত পোষণ করে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
বুধবার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং অধ্যাপক শিবলী রুবাইতুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষক সমিতি মনে করে, এই কোটা সংস্কার এখন ‘যুগের চাহিদা’।
“সে অনুযায়ী কোটা সংস্কার বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত দ্রুততম সময়ে ঘোষণা করার জন্য আমরা আহ্বান জানাই।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “শিক্ষার্থীদের নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে কোনোরূপ পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।”
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি রোববারের সংঘর্ষের সময় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে।