উত্তরা মেডিকেলের ৫৭ শিক্ষার্থীর ভর্তি কেন বেআইনি নয়: হাই কোর্ট

‘আগে এলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে চলতি শিক্ষাবর্ষে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া ৫৭ শিক্ষার্থীকে এক মাসের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।

সরকারি নীতিমালা অনুসরণ না করে ৫৭ শিক্ষার্থীর ভর্তি প্রক্রিয়া কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। 

স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে ১০ দিনের মধ্যে বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গেল বছরের ১৭ ডিসেম্বর ‘উত্তরা মেডিকেলে ভর্তিতে মেধাতালিকাকে উপেক্ষা’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়।

ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে কলেজের চলতি শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তিতে অনিয়ম ও সরকারি নীতিমালা অনুসরণ না করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ভর্তি বঞ্চিত এক প্রার্থীর অভিভাবক গত ২ জানুয়ারি রিট আবেদন করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রেজিনা মাহমুদ ও মো. আসাদুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

পরে আইনজীবী রেজিনা মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএসে ভর্তি হতে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজে ৮৮৬ জন ফরম সংগ্রহ করে। এই কলেজে মোট আসন ৯০টি। এর মধ্যে বিভিন্ন কোটায় ১৮টি। আর সাধারণ কোটায় ৭২টি আসন।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর সাধারণ কোটার এই ৭২টি আসনের ১৫টি আসনে ভর্তি হয়ে যান শিক্ষার্থীরা। বাকি ৫৭টি আসনে ভর্তির জন্য ১৪ ডিসেম্বর মেধা তালিকা অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি না করে ‘আগে এলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে আরেকটি ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয় কলেজ প্রশাসন।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে ১৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টার মধ্যে ভর্তিচ্ছুদের আসার জন্যে বলা হয়। কিন্তু তারিকুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী ১৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টার পর কলেজে গিয়ে জানতে পারেন ১১টার মধ্যেই ৫৭ আসনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে।

২৬১ ক্রমিকের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী তারিকুলের দাবি, মেধাক্রম অনুসারে ভর্তি নেওয়া হলে তিনি ওই কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতেন।

পরে ২ জানুয়ারি তারিকুলের বাবা নজরুল ইসলাম উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পদ্ধতি চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন।

সেই রিটের শুনানি নিয়েই আদালত ভর্তি হওয়া ওই ৫৭ শিক্ষার্থীকে এক মাসের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি রুল জারি করেছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিগত বছরগুলোতে কলেজটির কোটা পূরণ হত না। সেজন্য গত ১৪ ডিসেম্বর আগে আসলে আগে পাবেন বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় এবং সাধারণ কোটায় ৫৭ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি নিয়ে কোটা পূরণ করা হয়।”