ঢাকার গাবতলীতে রোববার সকালে বিআরটিসির বাস ডিপো উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী।
তার বক্তব্যের প্রায় শেষ পর্যায়ে এক পরিবহনকর্মী কাঁদতে কাঁদতে উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “স্যার, আমার মা অসুস্থ, আমি পাঁচ মাস যাবৎ বেতন পাই না। আমার সংসার চলে না, স্যার আমি এখন কী করব? আমার বেতনের ব্যবস্থা করে দেন। আমার বেতন কবে পামু কন?”
ওবায়দুল কাদের মনোযোগ দিয়ে ওই পরিবহনকর্মীর রোদন শুনে বলেন, “আমি এর ব্যবস্থা নিয়েছি। আগেই বলে দিয়েছি।”
অভিযোগকারী ওই শ্রমিককে অনুষ্ঠানের পর আর খুঁজে পাওয়া না যাওয়ায় তার সমস্যার বিস্তারিত জানা যায়নি।
এর আগে এই অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মঞ্চের কাছে গিয়ে বিশাল মঞ্চ দেখে সরে পড়েন।
তিনি মঞ্চে না গিয়ে সরাসরি নতুন ডিপোর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন এবং নতুন বাসের কাছে গিয়ে বেলুন উড়িয়ে বলেন, “এসব মঞ্চ আয়োজন করে দেশের ক্ষতি হয়।”
শুরুতে মঞ্চে অনেক চেয়ার থাকলেও মন্ত্রীর সময় বাঁচাতে মাত্র চারটি চেয়ার রাখা হয়। একটি চেয়ারে মন্ত্রী নিজে বসেন। দুপাশের দুটি চেয়ারে মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিআরটিসি চেয়ারম্যান বসেন।
মন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, “উদ্বোধনী ফলক, তারপরে বেলুনটা উড়িয়ে দিলেই তো শেষ। হুজুর একটু দোয়া পড়লেন, আর তো কিছু দরকার নেই। আমার তো মনে হয় না আর কিছুর দরকার আছে। এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় অনুষ্ঠান না করলেই ভালো।
“যাক তারপরও আপনারা আয়োজন করেছেন, এই আয়োজনটায় আনুষ্ঠানিকতা যেহেতু আছে সেহেতু আমি সচিবকে রেখে গেলাম, সচিব বক্তব্য রাখবে, আমাদের এমপি আসলামেরও (আসলামুল হক) আসার কথা ছিল, আসলে বক্তব্য রাখবেন।”
মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রায় শেষ দিকে মঞ্চে আসেন স্থানীয় সাংসদ আসলামুল হক। বক্তব্য শেষে ওবায়দুল কাদের তাকে বলেন, “অনুষ্ঠানে আসতে দেরি করে কেন?”
মন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালে স্থানীয় একজন নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঞ্চে গিয়ে বসতে উঁকি ঝুঁকি দিলেও তাকে মঞ্চে তোলা হয়নি।
বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বিআরটিসিকে দুর্নীতিমুক্ত করে সেবা সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেন।
“বিআরটিসির নতুন চেয়ারম্যান আসার পর থেকে শৃঙ্খলা ফিরে আসতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস, আমার সচিবও একজন সৎ মানুষ। আমি আশা করি, এদের আসাতে দুর্নীতি, অনিয়ম, হয়রানি থেকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি পাবে বিটিআরসি। এই প্রত্যাশা আমি মিরপুরে আজকের নতুন ডিপোর উদ্বোধন ঘোষণা করছি।”