সচিবালয় এলাকায় ভাংচুরের পর আমিনুলসহ আটক ১৫

দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার সময় সচিবালয় এলাকায় গাড়ি ভাংচুর ও সড়কে অগ্নিসংযোগের পর বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফুটবলার আমিনুল ইসলামসহ ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2017, 11:54 AM
Updated : 5 Dec 2017, 12:11 PM

মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে শিক্ষা ভবন ও খাদ্য ভবনের সামনে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর হয় এবং ভাংচুরকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার জন্য জড়ো হওয়া বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল বলে পুলিশের দাবি।

অন্যদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, পুলিশ বিনা উস্কানিতে তাদের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছিল।

জিয়া এতিমখানা এবং দাতব্য ট্রাস্টে দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার সাক্ষ্যগ্রহণ ছিল। তার হাজিরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির কয়েকশ নেতা-কর্মী নাজিমউদ্দিন সড়কের আদালত এলাকায় জড়ো হয়েছিল।

গাড়ি ভাংচুরের প্রত্যক্ষদর্শী সিলেটের মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমানের গাড়িচালক আব্দুস সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে স্যার আজ ১টায় সচিবালয়ে গিয়েছিলেন। আমি গাড়ি নিয়ে নিচে অপেক্ষা করছিলাম।

“বেলা ৩টার দিকে এখানে ৫ শতাধিক লোক মিছিল নিয়ে যায় এবং বৃষ্টির মতো ইট নিক্ষেপ করতে থাকে।”

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপসচিব মো. রোকন উদ্দিনের গাড়িচালক মো. শাহজালাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষা ভবনের ওইদিক থেকে ৫০০ এর বেশি ছেলেপেলে এসে হট্টগোল-গাড়ি ভাংচুর শুরু করে। আমি গাড়ির ভেতরে ছিলাম। পরিস্থিতি দেখে দ্রুত ওই এলাকা ছেড়ে যাই।”

শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাফর আলী বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে এবং বেশ কয়েকটি সরকারি গাড়ি ভাংচুর করে।”

বিডিআর বিদ্রোহের মামলার বিচারক হাই কোর্টের বিচারপতি নজরুল ইসলামের প্রটেকশনের গাড়িও ভাংচুর হয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম, ঢাকার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রফিকুল ইসলামমহ ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল গোলরক্ষক ছিলেন।

এ বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন আদালত থেকে ফেরার সময় বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিল। পুলিশ সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে অতির্কিতে তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে, লাঠিচার্জ করে এবং ধরপাকড়-গ্রেপ্তার করে।”

এর মধ্যে দিয়ে সরকারের ‘স্বৈরাচারী মনোভাব’ আবারও প্রকাশ পেল মন্তব্য করেন রিজভী।

খালেদা জিয়ার মামলাকে কেন্দ্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে সরকার ফাঁদ পাতবে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে তাতে পা না দিতে দলের নেতা-কর্মীদের সম্প্রতি নির্দেশনা দিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তার কয়েক দিনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটল।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছেন, বিএনপিই পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চাইছে।