রোহিঙ্গাদের বুকে টেনে সংখ্যালঘু বিতাড়নে সরকার: ঐক্য পরিষদ

সরকার মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও সাম্প্রদায়িক হামলা-সন্ত্রাসের বিচার না করে ধর্মীয় ‘সংখ্যালঘুদের’ দেশছাড়া করার পরিবেশ তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একে নেতা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2017, 03:30 PM
Updated : 14 Nov 2017, 03:30 PM

রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় ‘সংখ্যালঘুদের’ বাড়িঘরে হামলার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সুব্রত চৌধুরী।

তিনি বলেন, “সরকার রোহিঙ্গাদের বুকে নিয়ে আলিঙ্গন করলেও সংখ্যালঘুদের বিতাড়িত করার পক্ষপাতি।”

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী অভিযোগ করেন, প্রতিনিয়ত দেশের কোনো না কোনো এলাকায় ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়’ নির্যাতিত হচ্ছে, বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়া হচ্ছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট হচ্ছে, নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে।

“এসব কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত, যেসব সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বা পুলিশ বা অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী- কারও বিচার চাইতে এখানে আসি নাই। কারণ আমি জানি, আমি বিচার চাইলে যারা এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা সুরক্ষা পাবে, এবং যারা প্রশাসনে থাকবে তাদের প্রমোশন হবে। বিচার কোনো দিন বাংলার মাটিতে হবে না।”

২০১২ সালের পর দেশে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি’ শুরু হয়েছে মন্তব্য করে সুব্রত চৌধুরী বলেন, “এই সমাবেশে আমি প্রথমে দাবি করব, উত্তম বড়ুয়া, রসরাজ ও টিটু রায়ের ফাঁসি চাই! এদের ফাঁসি দিয়ে প্রমাণ করুন যে, এই দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু আপনার দরকার নেই।”

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ‘শূন্যের কোঠায়’ নিয়ে যেতে সরকার ‘জিরো টলারেন্সের নামে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত।

সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ বলেন, “রংপুরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনার পেছনে খুলনার জনৈক মৌলানাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, কিন্তু ঘটনার শিকার টিটু রায়কে গ্রেপ্তার করা হল। একইভাবে নাছিরনগরের রসরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, মন্দির-ঘরবাড়িতে হামলার পর তা সরকারিভাবে আবার নির্মাণ করা হয়, কিন্তু ‘মনের মন্দিরের যে ক্ষত’, তা সরকার কীভাবে সারাবে?

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর একের পর এক হামলার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কোন পথে এগোচ্ছে- তা একটি ‘বড় প্রশ্ন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বাসুদেব ধর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক অসীম সরকার বলেন, নির্বাচন এগিয়ে এলে জয়ী ও পরাজিত- দুই পক্ষের হাতেই সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হয়। সরকার আন্তরিক হলে এমন ঘটনার ‘পুনরাবৃত্তি হত না’।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিউবার্ট গোমেজের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্মল রোজারিও, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার পাল, ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বক্তব্য দেন।