রোববার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে দুই দেশের প্রতিনিধি দল যৌথ পরামর্শক কমিশনের এই চতুর্থ সভায় অংশ নেয়।
বৈঠকের পর মাহমুদ আলী এক বিবৃতিতে বলেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে যোগাযোগ বাড়াতে ভারত ও বাংলাদেশ নানাভাবে কাজ করে আসছে।
“আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য আজ আমরা নতুন কিছু প্রস্তাব রেখেছি। ভারত সেগুলো ইতিবাচক দৃষ্টিতে বিবেচনার কথা বলেছে।”
ঢাকা-চেন্নাই-কলম্বো বিমান চলাচল, চট্টগ্রাম-কলকাতা-কলম্বো জাহাজ চলাচল, পঞ্চগড়-শিলিগুড়ি রেল যোগাযোগ, ভারতীয় ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে ভুটানের সঙ্গে ইন্টারনেট যোগাযোগ, বাংলাদেশের নাকুগাঁও স্থলবন্দর থেকে ভারতের ডলু হয়ে ভুটানের গাইলেফুং স্থলবন্দরের সঙ্গে বাণিজ্য যোগাযোগের কথা রয়েছে ওই প্রস্তাবে।
সুষমা স্বরাজ বলেন, “দুই দেশের বন্ধুত্বের কারণেই আমরা দারুণ এক সমঝোতায় পৌঁছাতে পেরেছি। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিবেশীদের মধ্যে অবশ্যই সহযোগিতার সম্পর্ক থাকা উচিৎ।”
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ প্রয়োজন, তাই ভারত বাংলাদেশকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এই পরিমাণ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হবে।
মাহমুদ আলী বলেন, ভুটান যাতে পরে যোগ দিতে পারে, সে সুযোগ রেখেই বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারত বিবিআইএন মোটরযান চুক্তি বাস্তবায়ন করবে।
২০১৫ সালের জুনে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে সড়ক পথে যাত্রীবাহী, ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী যান চলাচলে মটরযান চুক্তি হয়। তবে ভুটান পরে জানায়, অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে আপাতত তাদের পক্ষে বিবিআইএনে থাকা সম্ভব হচ্ছে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জলবিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বিষয়ে বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের মধ্যে শিগগিরই ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে।
“নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছে ভারত।”
তিনি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়ার একটি প্রস্তাব নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
২০১৪ সালের মে মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এই দ্বিতীয়বারের মত বাংলাদেশ সফর করছেন সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে তার দেশ।
“যত ক্ষেত্রে মানুষে মানুষে সহযোগিতা সম্ভব, তার সবগুলোতেই আমাদের সহযোগিতা এখন বিস্তৃত হয়েছে।”
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে সহযোগিতা এগিয়ে নিতেও দুই দেশ বৈঠকে সম্মত হয়েছে।