২৭ ঘণ্টা ঢোল বাজিয়ে গিনেস বুকে চট্টগ্রামের সুদর্শন

টানা ২৭ ঘণ্টা ঢোল বাজিয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছেন পণ্ডিত সুদর্শন দাশ।

লন্ডন প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2017, 10:31 AM
Updated : 25 July 2017, 12:10 PM

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ছেলে সুদর্শন গত বৃহস্পতিবার গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রেকর্ডের সনদ পেয়েছেন।

পূর্ব লন্ডনের মেনর পার্ক এলাকার শিভা মুনেতা সঙ্গম হলে গত ২০ জুন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত টানা ঢোল বাজান তিনি।

পুরো ২৭ ঘণ্টার অনুষ্ঠান ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।

তারা ভিডিও রেকর্ডিংস ও লগ ফাইল দেখে খুটিনাটি পরীক্ষা করে এই বিশ্ব রেকর্ডসের স্বীকৃতি দেয়।

সুদর্শন দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশের ছেলে হিসাবে তিনি গর্বিত। তার এই সফলতা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। তিনি সব সময় চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসেন।

ঢোল বাজিয়ে রেকর্ড সৃষ্টির জন্য গত বছর আবেদন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের কাছে আবেদন করেন লন্ডনের নিউহ্যাম এলাকার একটি স্কুলের সংগীতের শিক্ষক সুদর্শন। চলতি বছর ৩ মে তারা তাকে চিঠি দিয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় টানা ঢোল বাজানোর চ্যালেঞ্জ জানান।

সুদর্শন বলেন, তিনি ২৭ ঘণ্টা ধরে ২৫টি সুরের তালে ঢোল বাজান। প্রতিটি সুর, গান, মিউজিক ও টাইর্র্মিং সব কিছু মিলিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়ে তাকে সনদ দেয় গিনেস কর্তৃপক্ষ। তাদের ওয়েবসাইটেও তার এই সাফল্য তুলে ধরেছে।

এর আগে গত বছর নভেম্বরে গিনেস বুকে নাম লেখাতে পণ্ডিত সুদর্শন এক নাগাড়ে ২৫ দিনে ৫৫৮ ঘণ্টা তবলা বাজান। আগের রেকর্ড ভাঙার সুদর্শনের এই প্রচেষ্টা এখনো গিনেস কর্তৃপক্ষের বিবেচনাধীন রয়েছে।

সুদর্শনের ২৭ ঘণ্টার ভিডিও ধারণকারী আব্দুল হান্নান বলেন, দুটি ক্যামেরায় প্রতিটি মুহূর্ত ধারণ করে একটি লগ ফাইল রাখতে হয়েছে। ঘণ্টায় তার ৫ মিনিট করে বিরতি নেওয়ার অনুমতি ছিল। এই বিরতির সময়টুকুও তাকে ক্যামেরাবন্দী করেছেন তারা।

চট্টগ্রামের আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমিতে সুদর্শনের তবলায় হাতেখড়ি হয় চার বছর বয়সে। ১৯৯০ সালে ফুলকুঁড়ি আয়োজিত এক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক পাওয়ার দুই বছরের মাথায় শান্তিনিকতনে যান পণ্ডিত বিজন বিহারি চ্যাটার্জির কাছে প্রশিক্ষণ নিতে। সেখানেই ১৯৯৮ সালে মেলে ‘তবলা বিশারদ’ উপাধি।

এরপর আইন পড়তে লন্ডন গেলেও তবলার নেশা তাকে ছাড়েনি। ২০০৪ সালে নিউহ্যাম এলাকায় ‘তবলা অ্যান্ড ঢোল একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা করেন সুদর্শন।

২০১১ সালে তার ‘লার্ন টু প্লে তবলা’ ডিভিডি  আকারে প্রকাশিত হয়। দুই বছর পর বাজারে আসে ‘লার্ন টু প্লে তবলা উইথ মিউজিক’।

চ্যানেল ফোর, বিবিসি টেলিভিশন, স্কাই টিভি ও ব্রাজিলের ফিনিক্স টেলিভিশনে তবলা বাজানো সুদর্শনের রয়েছে ১০০টির বেশি কনসার্ট ও পুরস্কার বিতরণীতে বাজানোর অভিজ্ঞতা।

লন্ডন বারা অব নিউহ্যামের শিক্ষক সুদর্শন এর আগে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে মিউজিক ইন্সপেক্টর হিসেবেও কাজ করেছেন। বাজিয়েছেন রয়েল অ্যা লবার্ট ও বারবিকান হলে; ঝুলিতে আছে জনপ্রিয় ব্যান্ড দল ওটুর সঙ্গে তবলায় বোল তোলার স্মৃতি।