প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের ৪৫তম জন্মদিনে যাত্রা শুরু করল বইঘর ‘দীপনপুর’।
Published : 13 Jul 2017, 01:17 AM
বুধবার বিকালে রাজধানীর কাটাবন মোড়ে ‘দীপনপুর’র উদ্বোধন করেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে উগ্রবাদীদের হামলায় নিহত হন প্রকাশক দীপন।
দীপনের মৃত্যুর পর তার সহধর্মিনী ডা. রাজিয়া রহমান জলি এগিয়ে আসেন স্বামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে। জাগৃতির হাল ধরেন তিনি, পাশাপাশি দীপনের স্মৃতি ও চেতনাকে ধরে রাখতে রাজধানীতে প্রতিষ্ঠা করেন ভিন্নধর্মী বুকশপ ক্যাফে ‘দীপনপুর’।
এলিফ্যান্ট রোডের ২৩০ নম্বর ভবনে (অটবি শো-রুমের উপর তলায়) প্রায় তিন হাজার স্কয়ার ফুটের বিশাল পরিসরে এই বুকশপ ক্যাফে করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসেছিলেন দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, অধ্যাপক আবুল বারকাত, অধ্যাপক ইয়াসমীন হক, দীপনের স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান জলি, জ্ঞান ও সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ওসমান গনি।
অনুষ্ঠানে জাফর ইকবাল বলেন, “আমার বহু দিনের স্বপ্ন ছিল সুন্দর পরিবেশে একটি বইয়ের রাজ্য, যেখানে রাজ্যের সব বই থাকবে, থাকবে বসে বসে বই পড়ার সুযোগ। দীপনপুর হচ্ছে সে রকমই একটি বুকশপ। আমার বিশ্বাস, কেউ একবার এখানে এলে তার মন নির্মল আনন্দে ভরে উঠবে।”
আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, “বেঁচে থাকলে দীপন আজ তার জন্মদিন পালন করত। সে আজ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার সব স্বপ্ন বেঁচে আছে। তার স্বপ্ন ছিল বই নিয়ে। মানুষকে সে বই পড়তে উৎসাহ দিত। নিজেও প্রচুর পড়াশোনা করত। দীপন সব সময় বিশ্বাস করত, বইয়ের মধ্য দিয়ে সমাজের পরিবর্তন করা সম্ভব।
দীপনপুরে এক পেয়াল চা বা কফির সঙ্গে পছন্দের বইটি বসে পড়াও যাবে। প্রয়োজনীয় বই খুঁজে না পেলে অর্ডার দিয়ে গেলে যথাসময়ে তার গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
অনলাইনেও বই অর্ডারের সুযোগ রয়েছে। বই ছাড়াও সেখানে রয়েছে ‘দীপনতলা’ নামে অনুষ্ঠানস্থল। চাইলে যে কেউ এখানে সাহিত্য, কবিতা পাঠ, বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করতে পারবেন। রয়েছে ‘ক্যাফে দীপাঞ্জলি’। এখানে বই পড়া ও দেখার পাশাপাশি চা, কফি ও ফ্রেস জুস পাওয়া যাবে। পাওয়া যাবে স্বাস্থ্যসম্মত নাস্তা। রয়েছে শিশু-কিশোরদের জন্য স্বপ্নরাজ্য ‘দীপান্তর’। শিশুরা এ কর্ণারে বই পড়তে পারবে, আঁকতে পারবে। পাশাপাশি খেলতেও পারবে।
“দীপনের কয়েকজন বন্ধু এবং আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে দীপনের স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তারই একটি উদ্যোগ হচ্ছে ‘দীপনপুর’।”