তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাদ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাক স্বাধীনতা হরণের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই।
Published : 02 May 2017, 11:48 PM
মঙ্গলবার ঢাকায় জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন মন্ত্রী।
এদিনই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলে, ভিন্ন মত প্রকাশের পথ রুদ্ধ করতে সরকার সব কিছুই করছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার খর্বে তথ্য প্রযুক্তি আইন ব্যবহারের অভিযোগও করে।
২০০৬ সালে প্রণীত তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা দেশেও রয়েছে। এই ধারাটিকে মত প্রকাশের অধিকারের অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে গণমাধ্যম ও অধিকারকর্মীরা।
৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারও মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি ৭ থেকে ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা।
সাইবার অপরাধ দমনে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। তা প্রণীত হলে তথ্য প্রযুক্তি আইন এতে অঙ্গীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আনিসুল হক খেলাঘর আসরের অনুষ্ঠানে বলেন, “নতুন ডিজিটাল আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে৷ এ আইনে ৫৭ ধারার বিষয়টি পরিষ্কার করা হবে৷
“সে সঙ্গে এ সরকারের যে বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই, তা এ আইনে প্রমাণ করে দেওয়া হবে।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এর অস্পষ্টতা দূর করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈকক করে শিগগিরই চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করা হবে।”
সুপ্রিম কোর্টে স্থাপিত ভাস্কর্যটি নিয়ে সরকারের বিরোধিতা আর ইসলামী গোষ্ঠীর বিরোধিতা এক নয় বলে বোঝাতে চেয়েছেন আনিসুল হক।
সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন দাবি তোলার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে ভাস্কর্যটি অপসারণে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, “এটা কোনো ধর্মের ভাস্কর্য নয়, এটা লেডি জাস্টিসের ভাস্কর্য। এটি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কারণ লেডি জাস্টিস শাড়ি পরতেন না। আর এজন্যই সরকার এর বিরোধিতা করছে।”
পাঠ্যপুস্তক থেকে অসাম্প্রদায়িক লেখকদের লেখা বাদ দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিলুপ্ত করতে দেশের একটি কুচক্রি মহল অপতৎপরতা চালাচ্ছে। পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন এবং বর্তমান হালদশার জন্যও তারা দায়ী।
“এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র, যেমনটা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার সময়। আমাদেরকে সময় দেন, আমরা দোষীদের বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলব।”