এই আলোচনায় নারী উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ পুরুষের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন; কেউ বা কোনো সহযোগিতার অপেক্ষায় না থেকে নারীকে নিজের ইচ্ছা স্বাধীনভাবে চলার পক্ষে মত জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘নারীর সাফল্যের পেছনে পুরুষের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে উইমেন এন্ট্রাপ্রিনিওয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন।
অনুষ্ঠানে সাতরং হ্যান্ডিক্র্যাফটের পরিচালক শামীমা খান বলেন, শ্বশুরালয় থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া কুটির শিল্প পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সহযোগিতা নিয়েই তিনি এগিয়ে নিচ্ছেন। তার শ্বশুর জীবিত থাকতে শ্বাশুড়িকে এই কাজে সহযোগিতা করতেন।
“আমার শ্বশুরের নিরলস সহযোগিতায় শাশুড়ি এই ব্যবসা এগিয়ে নিয়েছেন। আর এখন ব্যবসার হাল ধরে স্বামী সন্তানদের সহযোগিতা পাচ্ছি।”
পাটপণ্য রপ্তানিকারক আফসানা আসিফ সোমা বলেন, “ব্যবসা দাঁড় করানোর পেছনে আমার স্বামীর ব্যাপক ভূমিকা ছিল। তার সহযোগিতা ছাড়া ব্যবসায়ী পরিচয় অর্জন করা সম্ভব হত না।”
“স্বামীরা যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, তাহলে স্ত্রীরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারে। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা সহযোগী হলে অগ্রগতির বাধা অনেকটা কেটে যায়,” বলেন তিনি।
মাহজাবিন নামে এক নারী উদ্যোক্তা বলেন, নারীদের স্বাধীনচেতা জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে স্বামীর ‘সদিচ্ছা’ প্রয়োজন।
“আমার স্বামীর আগ্রহের কারণেই আমি আজ ব্যবসা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছি। অন্যথায় ব্যবসায়ী হতে পারতাম কিনা সন্দেহ।”
অন্যদিকে রোজিনা নাছির সিনথিয়া নামে এক নারী উদ্যোক্তা বলেন, “পুরুষরা কখন কী সহযোগিতা করছে, তার অপেক্ষায় না থেকে নিজেদের মতো করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ।”
তবে সহযোগিতা পেলে তাও গ্রহণ করার পক্ষে তিনি।
বিয়ের পর অনেক নারী সংসারের চাপে চাকরির আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন বলে জানান সিনতিয়া। অনেক সময় সংসার থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার কথাও বলেন তিনি।
ডিপিডিসি কর্মকর্তা আনুশকা বলেন, শৈশবে ছেলে শিশুদের নারীদের সম্মান করানো শেখালে নারীদের সমস্যা অনেকাংশেই দূর হবে।
অনুষ্ঠানের অতিথি আলোচক কর কমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর কিছুটা অগ্রগতি হলেও সেটা শক্ত ভিত্তির রূপ পায়নি।
“বিচ্ছিন্নভাবে অগ্রগতি দেখে সেটাকে সামগ্রিক অগ্রগতি বিবেচনা করা যাবে না। সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে আন্তরিকতা ও সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।”