দেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলছেন, বাংলাদেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নেই।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2017, 01:25 PM
Updated : 4 March 2017, 05:16 AM

মঙ্গলবার সংসদে প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, “বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। এই সরকার কোনোভাবেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন, অনুমোদন, অনুসমর্থন অথবা উৎসাহিত করে না।

“…বাংলাদেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিদ্যমান নেই।”

তবে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি মাসেই র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৭ জন নিহত হয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ব্যত্যয় দেখা গেলে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করা হয়।

“বিভিন্ন অভিযোগে ৫০৪ জন পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত/বাধ্যতামূলক অবসরসহ বিগত ৫ বছরে ৬৬ হাজার ১৪ জন পুলিশ সদস্যকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।

“পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে সাথে সাথে অনুসন্ধান সাপেক্ষে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ হয়ে থাকে। বিগত ৫ বছরে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ৬১ হাজার জনকে লঘুদণ্ড, ৩ হাজার ৬০০ জনকে অন্যান্য গুরুদণ্ড ও ৫০৪ জনকে চাকুরিচ্যুত/বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়েছে।”

থানায় জিডি করতে অর্থ আদায় ও ভিকটিমকে ‘নাজেহালের’ অভিযোগ নাকচ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সাধারন মানুষ থানায় জিডি করতে গেলে কর্মরত কর্মকর্তার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ সত্য নয়। ভিকটিমকেও নাজেহাল করা হয় না।”

সোনা চোরাচালান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও পার্শ্ববর্তী দেশের চাহিদার ভিত্তিতে স্বর্ণ চোরাচালান হয়ে থাকে। ভারতে বিপুল পরিমাণে স্বর্ণের চাহিদার কারণে বাংলাদেশে আগত স্বর্ণ ভারতে পাচার হয়ে থাকে। বাংলাদেশে আটককৃত স্বর্ণের মধ্যে অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্য হতে আসে।”

বাংলাদেশকে সোনা চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংসদে প্রশ্নোত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, “আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বর্তমানে বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল, দায়িত্বশীল ও সক্রিয় রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।”

তিনি জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ভারত সরকারের সাথে মোট ৯৩টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬টি স্বাক্ষরিত হয়েছে বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে।

এছাড়া বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ১০টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ আমলে স্বাক্ষরিত হয় নয়টি।

স্পিকার শিরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।