দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ‘নৈতিক’ দায় স্বীকার মন্ত্রীর

সড়ক দুর্ঘটনায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানির জন্য সুষ্পষ্টভাবে কে দায়ী তা জানেন না সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2016, 02:29 PM
Updated : 25 Sept 2016, 02:44 PM

তবে মন্ত্রী হিসেবে ‘নৈতিক’ দায়ের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। দুর্ঘটনা রোধে দায়ীদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর’ শাস্তির বিধান রেখে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগের কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

রোববার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দুর্ঘটনায় যে শত শত লোক মারা যাচ্ছে তার জন্য দায়ী কে জানি না। কেউ বলে চালকের দোষ। চালকরা বলেন রাস্তার দোষ, আবার বলা হয় জনগণের দোষ। আমরা দেখি গাড়ির ফিটনেস নেই, ব্রেক নেই, লাইসেন্স নেই।

“আমি চালকও নই, গাড়ির মালিকও নই। তারপরও মন্ত্রী হিসেবে আমার নৈতিক দায়দায়িত্ব রয়েছে। এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় যে মানুষ মারা গেছে মন্ত্রী হিসেবে সরকারের পক্ষে তার দায়দায়িত্ব আমি অকপটে স্বীকার করছি।”

কোরবানির ঈদ ঘিরে সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েকশ মানুষের মৃত্যুর যে খবর বেরিয়েছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেন কাদের।

“আমরা যে তথ্য পেয়েছি তাতে ১৫৩ জন মারা গেছে। তারপরও বলব এটা অনেক প্রাণ। আমি তো বলেছি মাছির মত, পাখির মত মানুষ মারা গেছে।”

কোরবানির ঈদ ঘিরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে সরকারি কোনো হিসাব এর আগে না পাওয়া গেলেও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, ঈদ ঘিরে সড়কে ১৯৩টি দুর্ঘটনায় ২৪৮ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫৬ জন।

বুয়েটের একটি জরিপের বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছিল।

“কিন্তু ঈদের সময় হঠাৎ করে সড়কে মৃত্যুর মিছিল। আমি অবাক বিস্ময় নিয়ে দেখলাম সড়ক দুর্ঘটনায় এই প্রাণহানি। তবে ঈদের পর আবার এই মৃত্যুর হার কমে এসেছে।”

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কঠোর আইন করতে যাচ্ছে সরকার।

“দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী হবে তাদের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হচ্ছে। আজ (রোববার) সংসদে আইন উঠছে। আশা করি আগামী অধিবেশনে এটা পাস করতে পারব।”

প্রস্তাবিত আইনে পরিবার প্রতি গাড়ি সীমিত করার বিধানও থাকছে বলে জানান তিনি। 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনাপ্রবণ ২২৭টি স্থান (ব্ল্যাক স্পট) চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৮টি ব্ল্যাক স্পটের প্রতিকারমূলক কাজ আগেই শেষ হয়েছে।

“জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় ১৫টি ব্ল্যাক স্পটের প্রতিকারমূলক কাজ শুরু হয়েছে। অবশিষ্ট ১৪৪টির প্রতিকারমূলক কাজের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৪৮টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি ৭০টি চলতি অর্থ বছরে সম্পন্ন হবে।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি নাগাদ পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হবে।