শেজাদের নাগরিকত্ব: যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত নয়!

ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় নিহত সেজাদ রউফ অর্ক যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী বলে তার বাবা এক মার্কিন পত্রিকাকে জানালেও বিষয়টি নিশ্চিত করতে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি ওয়াশিংটন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2016, 10:20 AM
Updated : 29 July 2016, 10:21 AM

গত ২৬ জুলাই ভোরে কল্যাণপুরের এক বাড়িতে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আরও আটজনের সঙ্গে সেজাদ রউফ অর্ক ওরফে মরক্কোর মৃত্যু হয়।  

পরদিন তার বাবা তৌহিদ রউফ যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ছেলের লাশ শনাক্ত করতে গেলেন, তখন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক কর্মকর্তাও তার সঙ্গে ছিলেন।  

বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র জন কিরবিকে যখন এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হল, তখন তিনি বলেন, “ঢাকায় পুলিশের অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক নিহত হওয়ার বিষয়টি আমি খবরে দেখেছি।”        

এরপর তদন্ত ও নিহতদের পরিবারের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কথা বলে আর কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন তিনি। 

“আমরা জানি যে এ বিষয়ে এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত চলছে। তাই আমি বলব, এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য আপনাদের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা উচিৎ।” 

একজন সাংবাদিক সেজাদের মার্কিন নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বললে কিরবি বলেন, “আমি কেবল এটুকু নিশ্চিত করতে পারি, ঢাকায় পুলিশের অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক নিহত হওয়ার খবর আমরা দেখেছি।”     

“আপনারা কি বিষয়টি খতিয়ে দেখেননি?”, এমন প্রশ্নে কিরবি বলেন, “যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের পরিবারের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কথা বিবেচনা করে... আমরা আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।”

এর আগে গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় এক বাংলাদেশি-আমেরিকানসহ ২২ জন নিহত হলে সে সময় দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।    

সেজাদের দাদা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রউফ এক সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ছিলেন। আর বাবা তৌহিদ রউফ ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন ঠিকাদার।

তৌহিদ রউফ এক সাক্ষাৎকারে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, সেজাদের জন্ম বাংলাদেশেই। ১৯৯৯ সালে তারা পরিবারের সবাই যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন।

পরে তৌহিদ ছাড়া পরিবারের সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়ে সান ফ্রান্সিসকোতে বসবাস শুরু করেন। সেজাদের মা ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে তারা ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসেন বলে তৌহিদ রউফ ওয়াশিংটন পোস্টকে জানান।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পর ২০১০ সালে ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে পাস করে সেজাদ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। মা মারা যাওয়ার পর তিনি বদলে যেতে থাকেন বলে এক স্বজন কলকাতা টেলিগ্রাফকে জানান।