গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হলেই ভারত-বাংলাদেশ আসামি হস্তান্তর

কারও বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে প্রমাণ উপস্থাপন না করেও বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যে আসামি বিনিময় করতে পারবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2016, 08:47 AM
Updated : 18 July 2016, 08:50 AM

ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিনিময়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান বহিঃসমর্পণ চুক্তির একটি ধারা সংশোধন করে ওই সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতের সঙ্গে করা এই ‘বহিঃসমর্পণ চুক্তি’ সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন পায়।

ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিনিময়ে ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে ‘বহিঃসমর্পণ চুক্তি’ করে বাংলাদেশ। ওই বছরের ৭ অক্টোবর এই চুক্তিতে অনুসমর্থন দেয় মন্ত্রিসভা।

সোমবার সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৩ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে চুক্তিটি কার্যকর রয়েছে। চুক্তির একটি ‘জটিল’ ধারা ভারত সরকার ‘সহজ’ করার অনুরোধ করেছিল।

“যদি আমাদের দেশে কোনো জজ, ম্যাজিস্ট্রেট, ট্রাইব্যুনাল বা এ ধরনের অথরিটি অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ইস্যু করে থাকে আর সে যদি ভারতের লোক হয় তাহলে আমরা তার জন্য বহিঃসমর্পণের সুপারিশ করতে পারব।”

“বাংলাদেশের কেউ ভারতে আছে, কিন্তু বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়ে গেছে, ট্রায়াল করার জন্য ভারত সরকার তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে। অনুরূপভাবে ভারত সরকার যদি ওয়ারেন্ট থাকা কাউকে চায় আমরা তাকে হ্যান্ডওভার করে দেব।”

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা কাউকে বিচারের সম্মুখীন করতে বহিঃসমর্পণের জন্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে হতো।

চুক্তি সংশোধনের প্রস্তাবে মন্ত্রিসভা সায় দেওয়ায় এখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেই যে কাউকে বহিঃসমর্পণের সুপারিশ করা যাবে বলে শফিউল আলম জানান।

বাংলাদেশে ১৮ বছর কারাবন্দি থাকার পর উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার নেতা অনুপ চেটিয়াকে গতবছর নভেম্বরে ভারত সরকারের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। এর কয়েক দিনের মাথায় নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেনকে বাংলাদেশের হাতে ফিরিয়ে দেয় ভারত।

আট বছর আগে বাংলাদেশে অনুপ চেটিয়ার সাজার মেয়াদ শেষ হলেও তাকে হস্তান্তরের বিষয়টি বহুদিন আটকে ছিল। বলা হচ্ছিল, আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় তাকে ফেরানো যাচ্ছে না।

শেষ পর্যন্ত ২০১৩ সালে দুই দেশের মধ্যে বহিঃসমর্পণ চুক্তি হলেও প্রমাণ দাখিলের বাধ্যবাধকতার কারণে ওই আইনে তাকে ফেরানো যায়নি। একই জটিলতা ছিল নূর হোসেনের ক্ষেত্রেও। 

শেষ পর্যন্ত  তাদের হস্তান্তর করা হলেও তা বহিঃসমর্পণ চুক্তির আওতায় হয়নি বলে সে সময় জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

কীভাবে হস্তান্তর হয়েছে সেই ব্যাখ্যায় তিনি সে সময় বলেছিলেন, “এটা বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে হয়নি। তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার আগে সেদেশের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে। এখন ছেড়ে দেওয়ার পর তারা নিয়ে গেছে।”