১০ জনের ওই তালিকায় থাকা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকির ছবি দেখে তাকে নিজের ছেলে সজিত দেবনাথ বলে শনাক্ত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামের জনার্দন দেবনাথ।
ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়রাও বলছেন, সজিত ২০০১ সালে জাপান যাওয়ার পর সেখানে স্থায়ী হন। সেখানেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সরবরাহ করা তালিকায় সাইফুল্লাহর বাবার নাম লেখা রয়েছে জনাধন। ঠিকানা নবীনগরের এতিমখানা গেইট। পাসপোর্ট নম্বর-টি কে ৮০৯৯৮৬০।
ওই তালিকা ধরে এবং পুলিশের কাছে খবর নিয়ে কড়ইবাড়ি গ্রামে গিয়ে জনার্দনের দেখা পায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
তিনি বলেন, তার সঙ্গে এক বছর আগে ছেলের সর্বশেষ যোগাযোগ হয়েছিল। তবে সজিত যে নিখোঁজ, তা তিনি জানতেন না।
“১৪ মাস আগে সে চেয়ারম্যান (জিনদপুর ইউনিয়ন পরিষদের )আবদুর রউফের বাসায় এসে আমাদের খবর দিলে আমরা সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি। এক বছর আগে সে জাপান থেকে ফোন দিয়ে আমার সাথে কথা বলেছিল। এরপর থেকে আর যোগাযোগ নাই।”
ছেলের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া জনার্দন বলেন, তার স্ত্রীও ছেলের জন্যে প্রায় প্রতিদিনই কাঁদেন।
জিনদপুর বাজারে কাপড়ের দোকান রয়েছে জনার্দনের। সজিত ছাড়া তার আর এক মেয়ে রয়েছে।
তিনি জানান, জিনদপুর ইউনিয়নের হুরুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর লাউর ফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন সজিত। এরপর সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে তার ছেলে।
২০০১ সালে জাপান সরকারের বৃত্তি নিয়ে দেশটিতে গিয়ে সেখানকার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছিলেন সজিত।
এরপর জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সজিত অধ্যাপনাও শুরু করেন বলে তার এক সহপাঠি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সেখানে এক জাপানি মেয়েকে বিয়ে করে সংসার পেতেছিলেন সজিত। চার ছেলে এক মেয়ে হয় তার। এর মধ্যেই সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।
জিনদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রউফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেধাবী ছাত্র সজিতকে আমি ছোটবেলা থেকেই চিনি। পরে জানতে পারি, সে মুসলিম হয়েছে।”
“১৪ মাস আগে সে এসেছিল, তবে বাড়ি যায়নি। আমার এখানে এক ঘণ্টার জন্য এসে তার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করে ঢাকায় চলে যায় “
“এরপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। সে যে নিখোঁজ, তাও জানতাম না,” বলেন ইউপি চেয়ারম্যান।
নবীনগর থানার ওসি ইমতিয়াজ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় বলেন, সজিতের নামে থানায় কোনো অভিযোগ নেই।
“তবে কিছুদিন আগে ঢাকার ডিবি থেকে মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকির নাম-ঠিকানা যাচাই করার জন্য বলেছিল। আমরা তদন্ত করে নাম-ঠিকানা যাচাই করে পাঠিয়েছিলাম।”