ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ভোটের সময় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ায় আগের তুলনায় সহিংসতা ও গোলযোগ কিছুটা কম হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
Published : 07 May 2016, 07:43 PM
শনিবারের এই নির্বাচনে অনিয়ম ও নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত হওয়ায় ৫১টি ভোটকেন্দ্রের ভোট বন্ধ করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “ইসি নির্লিপ্ত নয়, বরং অভিযোগ ও গণমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
শনিবার চতুর্থ ধাপে ৭০৩ ইউপির ভোট শেষে সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, এ ধাপেও কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। গোলযোগ, সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলে গণমাধ্যমেও বলা হয়েছে।
“ভোটে অনিয়ম হওয়ায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইসির ব্যবস্থার কারণে সহিংসতা ও গোলযোগের ঘটনা কিছুটা কমেছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি, চতুর্থ ধাপের তুলনায় আগামী দুই ধাপের নির্বাচন অনিয়ম ছাড়াই শান্তিপূর্ণ হবে।”
স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে তৃণমূলের এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে।
ছয় ধাপের এ ভোটের জন্য গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা হয়। ৪ জুন ষষ্ঠ ধাপের ভোটের মধ্য দিয়ে এ নির্বাচন শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
এদিকে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শনিবারের ভোটের আগ পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি লোকের প্রাণহানি হয়েছে; শনিবার ভোট নিয়ে আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ভোটে গোলযোগ-সহিংসতা কোনোভাবে কাম্য নয় মন্তব্য করে কাজী রকিব বলেন, “আজ যেসব ঘটনা ঘটেছে তা বিশ্লেষণ করলে মনে হয় না আমরা আগের তুলনায় পিছিয়েছি; বরং গোলযোগ কমে এসেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সমর্থকদের বলছি- ধৈর্য্য ধরেন। কারও মাথায় বাড়ি মেরে বা নিজেদের মধ্যে হানাহানির প্রয়োজন নেই। আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।”
চতুর্থ ধাপের এই নির্বাচনে আগের চেয়ে বেশি অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ করে বিএনপি বলেছে, নির্বাচনের নামে যা ঘটছে তাতে মানুষ নির্বাচন শব্দটা আর বেশি সম্মানের সঙ্গে নেবে না। ইসির ‘নির্লিপ্ত ভূমিকার’ কারণে সহিংসতা বাড়ছে বলে বিএনপির পাশাপাশি বিভিন্ন মহলও সমালোচনা করছে।
এসময় চতুর্থ ধাপের এই নির্বাচনেও ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল দাবি করে পরবর্তী দুই ধাপেও ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন কাজী রকিব।
ভোটপরবর্তী সহিংসতার বিষয়ে ইসি ‘সজাগ রয়েছে’ জানিয়ে সিইসি বলেন, “অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। ইতোমধ্যে ৫১টি কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। আরও প্রতিবেদন এলে এ সংখ্যা বাড়বে।
“আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনও মাঠে রয়েছে। ভোট পরবর্তী সহিংসতাও যাতে না ঘটে সে বিষয়ে সজাগ রয়েছি। আশা করছি, আগামীতে অনিয়ম ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভোট করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, মো. শাহনেওয়াজ ও ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।